ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেটা দু পক্ষ আর কোনও রাখঢাক রাখছে না। কখনও দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী থেকে সেনাপ্রধান। আবার কখনও দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধানকে। তবে দু পক্ষই স্পষ্ট জানিয়েছে, এই সম্পর্ক মজবুত ছিল বরাবর। সম্প্রতি অবনতি হলেও আবার সেটা ঠিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেয় দুই পক্ষই।
ভারতের বরাবর আশঙ্কা, বাংলাদেশের মাটি ব্যাবহার করে ভারতে সন্ত্রাস চালাতে চায় কিছু জঙ্গি সংগঠন। আর সেটা রুখতে কতটা সচেষ্ট বাংলাদেশের সরকার, সেটা নিয়ে মাথা ব্যাথা ভারতের। নয়া দিল্লিতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, সরকার পাল্টালে, ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কের পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি বলছেন, পশ্চিমা প্রতিবেশি ও বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান যে ঘনিষ্ঠতার
সম্পর্ক সেই জায়গা থেকে তিনি জানান, যেহেতু সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল একটি নির্দিষ্ট দেশ অর্থাৎ পাকিস্তান, আমাদের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের যে কোনও সম্পর্ক থাকলে আমাদের উদ্বিঘ্ন হওয়া উচিত। সন্ত্রাসবাদের পথটি সেই দেশ থেকেও ব্যবহার হতে পারে। যেটা প্রধান উদ্বিঘ্নের বিষয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কি হবে, সাংবাদিকের তরফে এমন প্রশ্ন এলে উপেন্দ্র দ্বীবেদী জানান, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, সেটা অত্যন্ত মজবুত। খুবই ভালো সম্পর্ক।
এমনকি নিয়মিত নোট বিনিময় হয়। যাতে কোনওরকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই।
অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জাসওয়াল জানান, বাংলাদেশে যেভাবে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হয়েছে, তাদের দ্রুত সাজা হোক। বাংলাদেশের সরকার এগুলি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করুক। কিছুদিন আগেই দেখা গিয়েছে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হবে, সেটা ঢাকাকে ঠিক করতে হবে।
আসলে বাংলাদেশে যে ভয়ংকর দিকে এগোচ্ছে, সেটা বুঝতে পারছে ভারত। এমনকি নানাভাবে সতর্ক করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের সরকারকে। কিন্তু সচেতন কি তারা আদেও হচ্ছে?
যেদিন সেনাপ্রধান বিদেশ সফর শেষে বাংলাদেশে ফিরলেন, সেদিনই ঢাকার রাজপথে দেখা গেল, হিজবুত তাহরীর মিছিল, বিক্ষোভ। মার্চ ফর খিলাফতের ডাক দিয়েছিল তারা। এমনকি ঢাকার রাজপথে তৈরি হয় রণক্ষেত্র। যদিও বাংলাদেশের পুলিস আটকে দেয়। কিন্তু তারা ইউনূসের আমলে বেড়ে উঠেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন ইউনূসের সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু এটাই ভারত বহু আগে বলার চেষ্টা করেছিল। তাতে কর্ণপাত করেনি বাংলাদেশ। এখন তারা বিপদে পড়েছে।
তবে সব থেকে বড় ইস্যু পাকিস্তান। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যে গড়ে তুলতে চাইছে বাংলাদেশ, সেটা নয়, সামরিক, অর্থনৈতিক এমনকি রাজনৈতিকভাবে তারা সম্পর্ক মজবুত করতে চায়। আর সেটা অত্যন্ত ভয়াবহ। এখন দেখার, শেষমেশ কি করে বাংলাদেশ।
Discussion about this post