সার্জিকাল স্টাইকের প্রস্তুতি ভারতের? শিলিগুড়ির চিকেন নেকের মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে লালমণিরহাটে একটি বিমান ঘাঁটি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন ইউনূস সরকার। মূলত, ভারতের চিকেন নেককে ব্যতিব্যস্ত করতেই বাংলাদেশের এই তৎপরতা বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। এই প্রেক্ষিতে গোটা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকেই সিল করার পথে হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পিনাকা মিসাইল সিস্টেমকে বাংলাদেশ মুখী রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্বের রাজ্য মিজোরামে মোতায়েন করা হয়েছে হাউৎজার কামান। এছাড়া, উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রায় ৩৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সেইসঙ্গে সীমান্তে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের উরি ক্যাম্পে হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গীরা। শহিদ হন ১৯ ভারতীয় জওয়ান। সেই হামলার জবাবেই ২৮ সেপ্টেম্বর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পথে হেঁটে পশ্চিমের প্রতিবেশীকে সবক শেখায় ভারত। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যেভাবে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর কট্টরপন্থী মৌলবাদীরা অত্যাচার চালাচ্ছে তা নিয়ে আগেই সে দেশকে হিংসা রোখার কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত সরকার। তবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা কখনও বলা হয়নি ভারতের পক্ষ থেকে। তবুও বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের মতো মহলগুলি থেকে বারংবার উঠে আসছে পাকিস্তানের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রসঙ্গ। তবে কি ভয় পাচ্ছে বাংলাদেশ? প্রসঙ্গত, পূর্বে নেপাল পশ্চিমে বাংলাদেশ মাঝখানে সঙ্কীর্ণ একটি অংশ। ভারতের নিয়ন্ত্রণে এতটাই সংকীর্ণ যে ম্যাপে দেখলে মনে হবে মুরগির ঘাড় বা চিকেন নেক। উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগসূত্র হিসেবে অবস্থান করছে চিকেন নেক। ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত পশ্চিমবঙ্গের এই করিডরটি ভারতের লাইফ লাইন। শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি ফাঁসিদেওয়া, চোপড়া ও ইসলামপুরের কিছুটা অংশ এই চিকেন নেকের মধ্যে পড়ছে। এই অংশকে শিলিগুড়ি করিডরও বলা হয়ে থাকে। উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের সড়ক এবং রেল যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এই করিডর। উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শহর শিলিগুড়ি। গোটা উত্তর পূর্ব ভারতের কাছেই শিলিগুড়ির গুরুত্ব অপরিসীম। শিলিগুড়ি করিডরের আন্তর্জাতিক গুরুত্বও যথেষ্ট। নেপাল এবং ভুটানও বিশ্বের বাকি অংশের সঙ্গে যুক্ত থাকতে ভরসা করে এই করিডোরের ওপর। আর এই চিকেনের থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার বা ৮১ মাইল দূরে তিব্বতের চুম্বি উপত্যকায় আছে চিনা সেনাবাহিনীর ঘাঁটি। আকাশপথে চিকেন নেক এর দূরত্ব মাত্র কয়েক মিনিটের। এ নিয়েই যত দুশ্চিন্তা ভারতের। এই চিকেন নেক এর ওপর চীনের আছে বিশেষ নজর। সরাসরি বলতে গেলে এটি দখলই বহুদিনের স্বপ্ন বেইজিংয়ের। সে কারণেই চিকেন নেক ভারতের মাথাব্যথার বড় কারণ। চিকেন নেক ছিঁড়ে নিলে অথবা চীন কোনও মতে ওই অংশটি যদি দখল করে নেয়। তাহলে সারা দেশ থেকে উত্তরপূর্ব ভারত এমনকি উত্তরবঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ওই অংশের সুরক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে তৎপর সেনা এবং বিমানবাহিনী। ২০১৭ সালে দোকলাম সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর শিলিগুড়ি করিডরে ভারত বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে। একই সময়ে চীনা সেনাবাহিনীও সিকিমের কাছাকাছি তাদের শক্তি বৃদ্ধি করে। ওই সীমান্ত থেকে শিলিগুড়ি করিডর আকাশ পথে ৪০-৪৫ কিলোমিটার দূরে। চীন চাইছে দূরত্ব আরো কমিয়ে আনতে। চিকেন নেক যেহেতু সীমান্ত লাকুয়া, সেকারণে বালাদেশেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, মুরগির ঘাড় বেশ দুর্বল। ভারকে চাপে ফেলতে মুরগির ঘাড়টি নিশানা করেছে চীন। চুম্বি উপত্যকা থেকেও ভেসে আসছে সেই বার্তা। আর বাংলাদেশ থেকেও একই বার্তা পাচ্ছে ভারত।
বাংলাদেশ, ভারতের এই প্রতিবেশী দেশের যে কোনও গণতান্ত্রিক সরকারের স্থায়িত্ব বরাবরই ভঙ্গুর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা...
Read more
Discussion about this post