সীমান্তের ওপারে টালমাটাল পরিস্থিতি। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে অশান্তি। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, লাগু হয়েছে কার্ফু। এই পরিস্থিতিতে কার্যত বন্ধ দুই দেশের সীমান্ত বাণিজ্য। আর এরই প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে এপার বাংলার পাতে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে এপার বাংলায় আসছে না পদ্মার ইলিশ। সেই সঙ্গে আমদানি বন্ধ বিভিন্ন প্রজাতির মাছেরও। ফলে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে মাছের দাম হু হু করে বাড়ছে।
সূত্রের খবর ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ টন মাছ ভারতে আসে। অশান্তির জেরে বন্ধ সীমান্ত বাণিজ্য, ফলে আসছে না মাছ। আর এতেই বেজায় সমস্যায় পড়েছেন মাছে ভাতে বাঙালি। বাংলাদেশ থেকে মাছের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কলকাতার বাজারে মাছের জোগান কমেছে। এরকম চলতে থাকলে পুজোর মুখে কলকাতা ও হাওড়ার মৎস্য আড়তে জোগান কমে যাবে। ফলে পুজোয় সময় মাছের অগ্নিমূল্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির জন্য বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক। কার্যত ওপার বাংলায় ঢুকছে না কোনও পণ্যবাহী ট্রাক। ফলে কার্যত বন্ধ বাণিজ্য। যার প্রভাব পড়েছে মাছ বাজারেও। কলকাতা ও হাওড়ার মাছের আড়তগুলিতে মাছের জোগান কমছে বলে জানা যাচ্ছে। মৎস ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশ থেকে শুধু ইলিশ নয়, আমদানি করা হয় ট্যাংড়া, ভেটকি, পাবদার মতো মাছও। প্রতিদিনই কয়েকশো কোটি টাকার মাছ বাংলাদেশ থেকে এপার বাংলায় আসে। এরপর তা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায়।
প্রতি বছর বর্ষার মরশুমে বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ আমদানি করেন হাওড়ার মৎস ব্যবসায়ীরা। পুজোর ইলিশের জোগানও এই সময় করে রাখা হয়। এবারও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছে প্রয়োজনীয় ইলিশের অর্ডার পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতির জেরে একটি ট্রাকও ভারতে ঢুকতে পারেনি। ফলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। আর মাছের আমদানি যদি আরও কয়েকদিন বন্ধ থাকে, তবে দুর্গাপুজোর সময় ইলিশের আকাল দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এর আঁচ এখন থেকেই টের পাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। ইতিমধ্যেই বাজারে মাছের দাম আকাশ ছুঁতে চলেছে। আর ইলিশের তো দেখাই মিলছে না। কাকদ্বীপ বা দিঘার মৎস আড়তেও ইলিশ কম আসছে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির আঁচ এবার পড়তে চলেছে এপার বাংলার বাঙালির পাতে।
Discussion about this post