বড় সঙ্কটের মুখোমুখি হল মায়নামারের জুন্টা সরকার। মংডো শহরের শেষ সেনাঘাঁটি দখল করে নিল বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। মায়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সক্রিয় সশস্ত্র জনজাতি বাহিনী মঙ্গলবার ওই সেনাঘাঁটির দখল নিয়েছে। মায়ানমারের কৌশলগত পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাউংড দখল করে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তও দখল করেছে আরাকান আর্মি। মাউংড শহরের শেষ সেনাঘাঁটি দখলের মাধ্যমে বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সম্পূর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনল সেই সশস্ত্র জনজাতি বাহিনী। মাউংড দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা। পাশাপাশি জানিয়েছেন, সেনাঘাঁটি দখলের সময় ওই ঘাঁটির কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে বন্দি করা হয়েছে। হামলার পর প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু সেনা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তখনই জুন্টা সরকারের ওই সেনাকর্তাকে বন্দি করা হয় বলে খবর।আরাকান আর্মি গত রবিবার জানিয়েছে, তারা নাফ নদীর উপরে যে কোনও ধরনের পরিবহণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। জুন্টা সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত পুলিশ এবং স্থানীয় মুসলিমেরা নৌকা করে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছিল। তাই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে মায়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই আরাকান আর্মি। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের দাবি, মায়ানমারের চলমান এই যুদ্ধে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা সহযোগী সংগঠন আরাকান-রোহিঙ্গা আর্মি বা এআরএ, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা সহ কয়েকটি সংগঠনের অবস্থান রয়েছে জুনতা বাহিনীর পক্ষে। এই জুনতাই বর্তমানে সেখানে ক্ষমতায়। কিন্তু, সীমান্তবর্তী আরাকান রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে সিঁদুরে মেঘ। কারণ, ময়ানমারের সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের আবহে পুরনো রোহিঙ্গা সঙ্কট। বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এমদাদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলছেন, “বাংলাদেশের জন্য বিষয়টা আরও জটিল হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পাঠানোর দিকেও ঝামেলা বাড়ছে।” উদ্বেগ যে আছে তা মানছেন টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন। বিবিসি বাংলাকে জানাচ্ছেন, “যেহেতু সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে গিয়েছে সে কারণে আমরা সীমান্তে সতর্কতা বজায় রেখেছি। যাতে কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে তা দেখা হচ্ছে।” আরাকান আর্মির হুঙ্কারে সবথেকে বেশি ভয় বাড়ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। সূত্রের খবর, বর্তমানে সেখানে আদিবাসীদের ৬ টি সশস্ত্র সংগঠন রয়েছে। শোনা যায় এদের মধ্যে সবথেকে শক্তি বেশি জেএসএস। জন্মস্থান রাঙামাটি। মনে করা হয় তাঁদের হাতে প্রায় ৫০ থেকে এক লক্ষ পর্যন্ত সশস্ত্র যোদ্ধা রয়েছে। এরা আবার পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তসাসন চায়। সূত্রের খবর, অন্যদিকে আরাকান আর্মি আরাকান সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার দখল করে বর্তমানে বান্দরবানে ধীরে ধীরে পা বাড়িয়েছে। এই বান্দারবন আবার গভীর অরণ্যে ঘেরা। ফলে আরাকান আর্মির নিরাপদ ডেরা হিসাবে উঠে আসছে এই বান্দারবন। বান্দরবানের রুমা উপজেলার প্রাংসা সীমান্ত দিয়ে আরাকান আর্মির অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে খবর। কিন্তু সে দিকে কী নজর রয়েছে ইউনূস প্রশাসনের?
বাংলাদেশের খোলামেলা আবদার! শেখ হাসিনাকে ফেরত চায় পদ্মাপাড়। এবার সরাসরি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পন চেয়ে ভারতকে নোট ভারবাল বাংলাদেশের। তবে কি...
Read more
Discussion about this post