বাংলাদেশের সনাতনী প্রতিবাদী সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেপ্তারি ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান কিছুটা হলেও বদলেছে বাংলাদেশ ইসকন কর্তৃপক্ষ। গ্রেপ্তার হওয়া প্রতিবাদী সাধুর সঙ্গে সংগঠনের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানালেও সংখ্যালঘু হিন্দুদের স্বার্থরক্ষার বিষয়ে তাঁর আন্দোলনকে সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের ইসকন কর্তৃপক্ষ। jএই পরিস্থিতিতে সারাদেশ জুড়ে ইসকনের সন্ন্যাসীরা প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। এরাজ্যে মায়াপুরে ইসকনের প্রধান কার্যালয়ে অভিনব প্রতিবাদ হল। হরিনাম সংকীর্তনের মাধ্যমে রীতিমতো অহিংস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের এই ঘটনায় অন্তবর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসকে বার্তা দেওয়া হল। সেদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর চলা নরকীয় অত্যাচার বন্ধ করা বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। এই প্রথম বাংলাদেশের ঘটনার প্রতিবাদে আসরে নামতে দেখা গেল ইসকনের প্রধান কেন্দ্র মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দিরের ভক্তদের। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই উত্তাল সমগ্র বাংলাদেশ। সেখানে লক্ষ লক্ষ সনাতনী পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিঃস্বার্থ মুক্তি দাবিতে। ব্যতিক্রমী চিত্র নয় এদেশেও। পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু হিন্দু সংগঠনের পাশাপাশি সনাতন ধর্মালম্বী মানুষজনকে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ক্রমাগত অত্যাচার সহ ইস্কন ভক্তকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নবদ্বীপে সনাতন সন্তু সমাজের ডাকে প্রতিবাদী পদযাত্রা। সম্প্রতি বাংলাদেশে ইস্কন ভক্তকে গ্রেপ্তার করা ও সোস্যাল মিডিয়ায় ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করার ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে নিন্দার ঝড়। পাশাপাশি বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের তরফেও দেশ জুড়ে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রতিবাদী কর্মসূচী। এবার সেই আঁচ এসে পরল মন্দির নগরী নবদ্বীপেও। সোমবার বিকেল আনুমানিক বিকেল চারটেয় শহরের প্রাচীন মায়াপুর জন্মস্থান মন্দিরের পার্শ্ববর্তী নরহরি ধাম মন্দিরপর সন্মুখ থেকে এক প্রতিবাদী পদযাত্রার আয়োজন করে সনাতন সন্তু সমাজ। এদিনের এই কর্মসূচীতে উপস্থিত নবদ্বীপের বিভিন্ন মঠ মন্দিরের অসংখ্য সাধু সন্তু সহ নবদ্বীপ শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বহু সাধারণ মানুষ যোগ দেন। আয়োজকের তরফে এদিনের কর্মসূচী প্রসঙ্গে জানানো হয়, বাংলাদেশ নয় , পশ্চিম বঙ্গেও বিভিন্ন সময়ে যে ভাবে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চলছে তার সব কিছুর প্রতিবাদেই এদিনের এই পদযাত্রার আয়োজন। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইস্কন ভক্তদের অবিলম্বে মুক্তি না দিলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেওয়া হয়। এদিনের এই কর্মসূচী শহরের বিভিন্ন পথ ঘুরে রাধাবাজার মোড় এলাকায় শেষ হয়। উল্লেখ্য, মঙ্গলবারও জামিন পেলেন না বাংলাদেশের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। উল্টে আরও একমাস জেলবন্দি থাকতে হবে তাঁকে। চট্টগ্রাম আদালতে এ দিন তাঁর জামিন মামলার শুনানির কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রের দাবি, সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে আদালতে মামলা লড়ার জন্য মঙ্গলবার রাজি ছিলেন না কোনও আইনজীবী। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এই মামলার শুনানি স্থগিত রেখেছে চট্টগ্রাম আদালত। ঘটনাচক্রে ইসকনের কলকাতা শাখার মুখপাত্র রাধারমণ দাস সোমবার রাতে অভিযোগ করেছেন, চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবীর উপর হামলা হয়েছে এবং তিনি হাসপাতালে ভর্তি। গ্রেপ্তারের পরে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে সওয়াল করেছিলেন ৫০ জনের বেশি আইনজীবী। অভিযোগ, তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কয়েকজন আইনজীবীকে খুনের মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী রমেন রায়ের বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে কট্টর মৌলবাদীরা, দাবি করেছেন কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস। চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এনামুল হক ঢাকা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন , আজ চিন্ময় দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষও শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করে। আদালত জামিন শুনানির জন্য ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি ধার্য করেছে। যেহেতু শুনানি হয়নি এ কারণে আসামিপক্ষের উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ নেই। আবার দায়রা জজ আদালতে অপেক্ষমাণ থাকার কারণে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও জামিন শুনানি করার সুযোগ নেই। ফলে ৩০ দিনের জন্য পিছিয়ে গেল চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি।
বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে এসেছেন ডঃ খলিলুর রহমান। গত বছর ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের তদারকি সরকারের ক্ষমতা দখলের...
Read more
Discussion about this post