বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব দুর্গোৎসব। সারা বছর এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে কোটি কোটি বাঙালি। তবে এবার পূজোর আগে পশ্চিমবঙ্গের বুকে যে নারকীয় ঘটনা ঘটে গেল, তার বিরুদ্ধে সবার এখন একটাই স্বর জাস্টিস ফর আরজি কর। ইতিমধ্যেই অনেক সংখ্যক সাধারণ মানুষ সহ সেলিব্রেটিরা উৎসবে যোগ দেবেন না জানিয়েছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা ঘোষণা করেছে সঠিক বিচার না পাওয়া পর্যন্ত কোনো উৎসবে ফেরা হবে না।
পুজোর হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন, তারপরেই পুজোর ঢাকের কাঠি পড়বে। তবে পুজো কমিটির প্রশ্ন যদি আবারো পূজায় আন্দোলনকারীরা রাত দখল করে অথবা মন্ডপে ঢুকে বিক্ষোভ দেখায়? তখন?
২৫ তারিখ কলকাতার সমস্ত পূজা কমিটিদের নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। যেখানে কিছু সংখ্যক কমিটির সদস্য কলকাতা পুলিশ কমিশনারেটের নতুন কমিশনার মনোজ বর্মা কে এই প্রশ্ন ছুড়ে দেন। “যদি পুজোর সময় ভিড়ের মাঝে আন্দোলনকারীরা ঢুকে বিক্ষোভ দেখায়? তখন তারা কি করবেন”? এখানেই প্রশ্ন প্রশাসনের ওপর দায়িত্ব পালনের ভরসা নিয়ে। পুজোর সময় কলকাতায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকে। তার সাথে প্রত্যেক কমিটির সদস্যরা ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজ করে। এত পুলিশ থাকার পরেও কিসের ভয়? এই ভয় কি 14 ই আগস্ট রাত দখলের দিন আর জি করে যেভাবে দুষ্কৃতী হামলা হয়েছে এবং প্রশাসন সেখানে কিছুই করতে পারিনি সেই ভয় কি কাজ করছে? প্রাক্তন কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, সেই ভয় কাজ করছে? বর্তমানে নতুন কমিশনারের ওপর কি ভরসা রাখতে পারছে না কলকাতা পুজো কমিটি গুলো?
অন্যদিকে এই প্রতিবাদের বিরোধিতা করে বিভিন্ন সময় তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতা এবং মুখপাত্ররা জানিয়েছে উৎসব হবে। মঞ্চের মধ্যে অনেক নেতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে দেখা গেছে। চ্যালেঞ্জ করে বলেছে প্রতিবারের থেকে এবার আরো ভালো করে উৎসব পালন করা হবে। তবে প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গের বুকে এই কালো দাগ, সরকারের ব্যর্থতা, সরকারের দায়িত্ব না পালনের লজ্জা ঢাকার জন্যই কি এবার উৎসবে জোর দিচ্ছে? তিলোত্তমার কান্নার শব্দ যাতে না শোনা যায়, তার জন্যই কি উৎসবের মেজাজ ফিরে আনতে চাইছে শাসক দল? খবরের পাতায় অথবা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার পাশাপাশি গণমাধ্যমে তিলোত্তমার নাম মুছে গিয়ে যাতে উৎসবের নাম চলে আসে এটাই কি চেষ্টা? এইসব প্রশ্ন বিভিন্ন বিরোধী মহলে এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে এখনো অব্যাহত। তবে পূজা কমিটির এই প্রশ্নের উত্তরে বর্তমান পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান পুলিশের তরফ থেকে সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা হবে।
Discussion about this post