চিন্ময়কৃষ্ণ ছাড়াও বাংলাদেশে আরও কয়েক জন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করেছে সে দেশের পুলিশ। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে কেউ জেলে চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কেউ আবার খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে ব্রিটেনও। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতাদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ উঠেছে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে। বিরোধী কনজ়ারভেটিভ দলের সাংসদেরা এ বিষয়ে সংসদে আলোচনার দাবিও জানান। সেই আবহেই এ বার ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের সতর্ক করল। বাংলাদেশে ভ্রমণ সংক্রান্ত বিষয়ে সতর্কতা জারি করল ব্রিটেন সরকার। সে দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশের কিছু অংশে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ‘ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস’ মঙ্গলবার এই সতর্কতা জারি করেছে। প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশে কিছু জায়গায় ভ্রমণ এড়ানোর জন্য নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রক এক প্রেস বিবৃতিতে এফসিডিও-র এই সতর্কতার কথা উল্লেখ করেছে। এদিকে ভারতের মাটি থেকে আমেরিকায় আয়োজিত এক আলোচনাসভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতা করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দুষেছেন তিনি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর মন্তব্য, ‘‘ইউনূসের পরিকল্পনাতে গণহত্যা চলছে বাংলাদেশে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আজ আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে মুহাম্মদ ইউনূসই ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে একটি সুনিপুণ পরিকল্পনার মাধ্যমে গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছেন। তাঁরাই মাস্টারমাইন্ড। এমনকি, তারেক রহমান লন্ডন থেকে বলেছেন যে, যদি মৃত্যু চলতেই থাকে, তা হলে সরকার টিকে থাকবে না।’’ এর আগেই বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে চরমপন্থার বাড়বাড়ন্ত এবং সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন নিয়ে ফের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবির। প্রথম দফায় দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা লিসা কার্টিস মন্তব্য করেছেন, শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ফলে বাংলাদেশ ‘গুরুত্বপূর্ণ একটি সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে, যা তাদের ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করবে’। চরমপন্থী, মৌলবাদী এবং জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে শেখ হাসিনা ‘প্রশংসনীয়’ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকার বাইডেন সরকার এবং ট্রাম্পের মধ্যে গুরুতর মতভেদের বিষয়টি আগেও সামনে এসেছে। শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, বাইডেন প্রশাসনই গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও। আগরতলার ঘটনার পর ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভর্মাকে তলব বাংলাদেশের। মঙ্গলবার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে সেই দেশের বিদেশ মন্ত্রক। ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে যান প্রণয়। বিকেল ৪ টে নাগাদ যান তিনি। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানান, ‘আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলাম। ভারতের হাই কমিশনার দেখা করতে এসেছিলেন।’ বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক বিষয়ক উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আগরতলা ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছিল। কথিত হামলায় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন চত্বরে বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর অভিযোগ করেছে।’ প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের কাজকর্ম নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ব্রাসেলসের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। তাতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়ে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। তাদের উচ্ছেদের পরে ইউনূস সরকারের উপরে দেশের মানুষের অগাধ প্রত্যাশার চাপ। তবে রাজনীতি, অর্থনীতি, নির্বাচন ব্যবস্থা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মতো ক্ষেত্রে সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই রিপোর্টেই বলা হয়েছে, নতুন সরকারের পক্ষে এই সুযোগ সদ্ব্যবহার করা খুবই কঠিন।
মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ জঙ্গিহানা হয়। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পর্যটক।...
Read more
Discussion about this post