ভারতের জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে আগেই গর্জে উঠেছিল কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকদের একাংশ। এমনকি বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা করবেন না বলে ঘোষণা করেছিলেন তারা। একাধিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের তরফেও এমন ঘোষণা সামনে এসেছিল। কোনও কোনও চিকিৎসক আবার শর্তসাপেক্ষে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
সাম্প্রতিক কালে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে ফাঁটল তৈরি হয়েছে, তাতে মহা সঙ্কটে পড়েছেন চিকিৎসার জন্য নিয়মিত কলকাতায় আগত কয়েক হাজার বাংলাদেশি। কারণ, ভারত – বাংলাদেশ সম্পর্কে অস্থিরতার ফলে তাঁদের এ-পারে আসায় এখন কার্যত বাঁধা সৃষ্টি হয়েছে। নিয়মের এই ‘ফাঁস’ আলগা হয়ে কলকাতা-সহ দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার পথ কবে আবার সুগম হবে, সেই চিন্তায় দিন অতিবাহিত হচ্ছে পদ্মাপারের রোগী এবং তাঁদের পরিবার পরিজনদের।
অগাস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের জেরে নির্বাচিত সরকারের পতন হয়েছে বাংলাদেশে। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও সে দেশে সাবেক প্রধান মন্ত্রীর পদত্যাগ ও অন্তরবর্তী সরকার গঠনের পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। সংঘর্ষ, বিক্ষোভে জর্জরিত বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি। লাগাতার চলছে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ আসছে ওপার বাংলা থেকে। ভারত-বিদ্বেষী হুঙ্কার ও কাজকর্মের ক্রমাগতঅভিযোগ আসছে কট্টরপন্থীদের কাছ থেকে ।
উল্লেখ্য, পড়শি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গত কয়েক মাসে পুরোই বদলে গিয়েছে। গণঅভ্যায়ুথানের পর বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদান সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ভারতের তরফে। এরপর সময়ের সঙ্গে কিছুটা শিথিল হয় সেই নিয়ম, আপাতত বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসার জন্য মেডিক্যাল ভিসা চালু করা হয়েছে। এবার তা পেতেও বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশী নাগরিকদের। একে ভিসার জটিলতা, সেই সঙ্গে কলকাতার একাধিক হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের একাংশ বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে চিন্তায় হাজার হাজার বাংলাদেশি রোগী।
কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে,
প্রতিবছরের মতো এবারও ডিসেম্বর মাসের শেষের দিন গুলির মধ্যে বহু বাংলাদেশি রোগীর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যেই তাঁদের মধ্যে অন্তত ৫০- ৬০ জনের অস্ত্রোপচারের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর রেশ হিসাবে দেখা যাচ্ছে গত কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা অত্যন্ত বেশি পরিমাণে কমেছে। এমনকি শীঘ্রই তাদেরও অস্ত্রোপচার বাতিল করতে বা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
Discussion about this post