বর্তমানে মায়ানমারে চলমান যুদ্ধের আবহে বারবার উঠে এসেছে রাখাইনের মতো রাজ্যের নাম। সেখানেই বিদ্রোহী গোষ্ঠী হিসাবে উঠে এসেছে এই আরাকান আর্মি। বর্তমানে দেশের মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণও তাঁদের হাতে। ফলে বাংলাদেশ-মায়ানমারের প্রায় পৌনে ৩০০ কিলোমিটার সীমানা পুরোটাই এখন আরাকান আর্মির দখলে চলে গিয়েছে বলে দাবি করছে মায়ানমারের একাধিক সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশ-মায়ানমারের সীমান্তবর্তী নাফ নদীর মায়ানমার অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মির এই ঘোষণার পর নাফ নদীতে নৌ চলাচলে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বাংলাদেশের তরফে। নজরদারি বাড়িয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিজিবি। ইতিহাস বলছে, মায়ানমারের বুকে সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের লড়াই নতুন নয়। জুনতা আর্মির বিরুদ্ধেও তৈরি হয়েছে একাধিক ‘রিবেল’ গ্রুপ। তবে ধারেভারে সবথেকে বেশি শক্তিশালী এই আরাকান আর্মি। তাঁদের লক্ষ্য একটাই আরাকান প্রদেশের স্বায়ত্ত্বশাসন। যদিও যা দিতে নারাজ জুনতা। সে কারণেই প্রায় দীর্ঘদিন থেকেই চলছে লড়াই। তবে এখানেও জুড়েছে ধর্ম। এদিকে জুনতা ও আরাকান আর্মি দুই শিবিরেই আবার বৌদ্ধ ধর্মবলম্বীদের সংখ্যা বেশি। সে ক্ষেত্রে দুই শিবিরের কাছেই কোণঠাসা রোহিঙ্গারা। অন্যদিকে চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলেও বৌদ্ধ ধর্মবলম্বীদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। একদিকে যখন হিন্দু নিপীড়নের দায়ে গোটা বিশ্বের কাছে মুখ পুড়ছে বাংলাদেশের সেখানে বৌদ্ধ জট তাঁদের নতুন করে চাপে ফেলতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ। যদিও আন্তর্জাতিক সূত্র মতে, ধর্মীয় আগ্রসনের কোনও রণকৌশল এখনও পর্যন্ত নিতে দেখা যায়নি আরাকান আর্মিকে। কিন্তু, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর সীমাহীন অত্যাচারের অভিযোগে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে ভারত। ঢাকায় গিয়ে ঝাঁঝালো বার্তা দিয়ে এসেছেন ভারতের বিদেশ সচিব। এমতাবস্থায় বৌদ্ধ শিবির সোজা কথায় মায়ানমার জট যদি আরও পাকায় তা যে ঢাকার মাথা ব্যথার কারণ বাড়াবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উদ্বেগ যে আছে তা মানছেন টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন। এক সংবাদমাধ্যমকে জানাচ্ছেন, “যেহেতু সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে গিয়েছে সে কারণে আমরা সীমান্তে সতর্কতা বজায় রেখেছি। যাতে কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে তা দেখা হচ্ছে।” আরাকান আর্মির হুঙ্কারে সবথেকে বেশি ভয় বাড়ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। সূত্রের খবর, বর্তমানে সেখানে আদিবাসীদের ৬ টি সশস্ত্র সংগঠন রয়েছে। শোনা যায় এদের মধ্যে সবথেকে শক্তি বেশি জেএসএস। জন্মস্থান রাঙামাটি। মনে করা হয় তাঁদের হাতে প্রায় ৫০ থেকে এক লক্ষ পর্যন্ত সশস্ত্র যোদ্ধা রয়েছে। এরা আবার পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তসাসন চায়। সূত্রের খবর, অন্যদিকে আরাকান আর্মি আরাকান সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার দখল করে বর্তমানে বান্দরবানে ধীরে ধীরে পা বাড়িয়েছে। এই বান্দারবন আবার গভীর অরণ্যে ঘেরা। ফলে আরাকান আর্মির নিরাপদ ডেরা হিসাবে উঠে আসছে এই বান্দারবন। বান্দরবানের রুমা উপজেলার প্রাংসা সীমান্ত দিয়ে আরাকান আর্মির অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে খবর। কিন্তু সে দিকে কী নজর রয়েছে ইউনূস প্রশাসনের? বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার মংডু, বুথিডং ও পালেতাওয়া দখলে নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। কয়েক মাস ধরে লাগাতার জুনতা বাহিনীর সঙ্গে লাগাতার লড়াইয়ের পর মংডু শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। আর তারপর থেকেই উদ্বেগের জল ঢেউ তুলছে নাফ নদীতেও। পরিস্থিতি যে হাতে বাইরে যাচ্ছে তা কিছুটা আঁচ করতে পেরেছে বিজিবি। বেড়েছে টহল। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কতগুলি রোহিঙ্গা সংগঠনের নেতাদের অস্ত্র-সহ আটক করতে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশকে। কক্স বাজারের স্থানীয় প্রশাসনও এবার নতুন করে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করেছে। ফেরত পাঠানো তো যাচ্ছে না উল্টে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু কেন? নিরাপত্তা বিশ্লেষক এমদাদুল ইসলাম বিষয় আরও সহজ করে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, আরাকান আর্মির সঙ্গে জুনতা বাহিনীর যে যুদ্ধ চলছে তাতে রোহিঙ্গাদের বড় অংশ জুনতাকে সমর্থন করছে।
মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ জঙ্গিহানা হয়। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পর্যটক।...
Read more
Discussion about this post