আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি আরও একটি দেশ অতি গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা হল মায়ানমার। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যটিতে চীনের নজর রয়েছে। কারণ তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। অন্যদিকে কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ, ভারত এবং আমেরিকারও দৃষ্টি রয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের দিকে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকে এটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যেই রাখাইনকে নিজেদের বলয়ে রাখতে চীন ও ভারত নিজের জাল বিস্তার করে ফেলেছে।
মায়ানমার এবং বাংলাদেশ দুই প্রতিবেশী দেশ হলেও তাদের মধ্যে আদান প্রদান খবুই কম। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও বিশেষ লেনদেন নেই। বরং বরাবরই মায়ানমার বাংলাদেশের জন্য সংকট তৈরি করেছে। মায়ানমার থেকে বিতাড়িত প্রায় ১৫ লক্ষ রোহিঙ্গা বোঝা হয়ে রয়েছে বাংলাদেশের কাছে। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই দেশের অভ্যান্তরে গৃহযুদ্ধ, জাতিগত দাঙ্গা তা একেবারে চরমে। যা বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাগুলিতে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছে। এইবার আরও একটি ইস্যু যোগ হল, তা হল আরাকান আর্মি।
প্রায় দেড় দশক আগে আরাকান আর্মি তৈরি হয়। রাখাইন রাজ্যকে ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সরকারি বাহিনীকে রীতিমতে পরাজিত করে তারা পুরো অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। সর্বশেষ মংডু দখল করার মধ্য দিয়ে তারা মায়ানমার সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র দেড় দশকের কম সময়ের মধ্যে দেশটির সরকারের বাহিনীকে পরাজিত করে রাখাইন আর্মি তৈরি করতে যাচ্ছে নতুন একটি দেশ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে কোনও সময় স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারেন রাখাইন আর্মি। কক্সবাজার সীমান্তের ওপারে যে কোনও মুহূর্তে ঘোষণা আসতে পারে নতুন একটি রাষ্ট্রের। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলি বলছে, খুব শীঘ্রই দক্ষিণ এশিয়ার নতুন একটি দেশ আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। যা হচ্ছে রাখাইন রাজ্যকে ঘিরে।
এরমধ্যে ভারত, চীনের মতো দেশগুলি যোগাযোগ শুরু করেছে আরাকান আর্মির সঙ্গে। তৎপর রয়েছে আমেরিকাও। আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ বলছে মায়ানমারের সরকার ও আরাকান আর্মির দুপক্ষের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে ভারত ও চীনের। নতুন রাষ্ট্র গঠিত হলেও এই দুই দেশের তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে নতুন রাষ্ট্র গঠিত হলে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর বিষয়টি চাপা পড়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের পাশে নতুন রাষ্ট্র হলে বাংলাদেশের কি হবে? অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভৌগলিক সম্পর্কের নতুন সমীকরণে পড়তে পারে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন সমীকরণ মেলাতে পারবে বলে মনে করছে তারা। এখন দেখার, আদেও এই খবর কতটা সত্যি হয়। এরমধ্যেই চট্টগ্রাম নিয়ে আশঙ্কায় বাংলাদেশের তদারকি সরকার। বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র নিচ্ছে আরাকান আর্মি। চট্টগ্রাম লাগোয়া অঞ্চলে আরাকান আর্মিরা। যত দিন যাচ্ছে তাদের শক্তি বৃদ্ধি করছে তারা। উন্নত অস্ত্র আমদানি করছে। ইতিমধ্যেই মায়ানমার থেকে প্রচুর অস্ত্র নিচ্ছে আরাকান আর্মিরা। পাশাপাশি তারা একাধিক দেশ থেকে অস্ত্র কেনার কথা ভাবচ্ছে। যা নিয়ে চরম বিপাকে বাংলাদেশের তদারকি সরকার। বলাই বাহুল্য, আরাকান আর্মি বুঝিয়ে দিচ্ছে কতটা শক্তিশালী তারা। এদিকে তাদের সঙ্গে পেরে উঠতে পারবে না বুঝে মিশরের শরণাপন্ন হচ্ছে বাংলাদেশ, খবর সূত্রের।
Discussion about this post