বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে চলছে টানাপোড়েন। হাসিনা সরকারের পতনের পর এই দুই দেশের সম্পর্ক আরও তলানিতে পৌঁছছে। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর তা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। বেড়েছে ভারত বিদ্বেষ, ভারতকে আক্রমণ, এমনকি প্রকাশ্যে চলছে হুমকি। সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ভারত ভালো চোখে দেখেনি। সে কারণে ভারতের তরফ থেকে একাধিকবার অন্তর্বর্তী সরকারকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ তো হয়নি বরং সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন উত্তরোত্তর বেড়েছে। সেই আবহে মুখ খুললেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহাম্মদ ইউনূসের এখন শোচনীয় অবস্থা। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন হয়নি। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশের ভিতরে বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। এমনকি বিএনপি’র মত বাংলাদেশের শক্তিশালী রাজনৈতিক দলও ইউনূসের বিপক্ষে কথা বলা শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়েও সরকারকে বিদ্ধে ছাড়েনি রাজনৈতিক দলগুলি। কাজেই প্রবল চাপে ইউনূস। আর সেই আবাহে এবার মুখ খুললেন সেনাপ্রধান।
বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান বলেন, বাংলাদেশের জন্য ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশ ভারতের ওপর যেমন বহু জিনিসের উপর নির্ভরশীল, ঠিক অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকেও ভারত অনেক সুবিধা পেয়ে থাকে। ভারত থেকে বহু মানুষ বাংলাদেশের কাজ করতে আসে। বাংলাদেশের বহু নাগরিক ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যায়। একটি দেশ আরেকটি দেশ থেকে সাহায্য পাবে এটাই স্বাভাবিক। কাজের দুই দেশ স্বার্থ পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন, আমি প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে যথাযথ তার স্বার্থের প্রতি গুরুত্ব দেব। অন্যদিকে আমিও প্রত্যাশা রাখবো, প্রতিবেশী আমার স্বর্থকে গুরুত্ব দেবে। তিনি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং মিয়ানমার সীমান্তে যেন স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের হত্যা বন্ধ করতে হবে।
অর্থাৎ ইউনূস সরকার যে ভারতকে চটাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের উল্টে বিপদ বাড়বে, এটা বুঝতে পেরেছেন সেনাপ্রধান। অন্যদিকে আরাকান আর্মি নিয়েও অত্যন্ত সমস্যায় রয়েছেন তাও স্পষ্ট। এখন দেখার, যে বৈরিতা মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার চলছে, তার কিছুটা গতি বদল আনতে পারে কিনা সেনাপ্রধান!
Discussion about this post