সম্প্রতি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি রুশ যুদ্ধ জাহাজ এসে পৌঁছেছে। রাশিয়া এবং বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে বন্ধুত্বের সূচক হিসেবেই এই তিনটি রুশ যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশ এসে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সঙ্গে নৌ মহড়ায় যোগদান করার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশে উপস্থিত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক একটি শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে নিজেদেরকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবে।
কিন্তু বাংলাদেশ যখন এ যুদ্ধ জাহাজ এর ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে মেতে উঠেছে। তখন সিঁদুরে মেঘ দেখছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। রাশিয়ার আর্থিক সহায় বাংলাদেশ একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে ওঠার প্রস্তুতি চলছে। আরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেখা শোনাও রাশিয়া করবে এই ধরনের একটি চুক্তি আগে বাংলাদেশের সঙ্গে করেছে রাশিয়া। আর এই ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল।
কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন, কেন এই সময়ে রুশ যুদ্ধ জাহাজ এসে পৌঁছালো ঢাকায় ? আসলে কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান চারদিনের সফরে রাশিয়ায় গিয়ে ছিলেন । প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বেজিংয়ের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে চাইছে ঢাকা। কারণ, ঢাকা বুঝতে পারছে, যাবতীয় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ও সামরিক সরঞ্জামের জন্য চিনের উপর নির্ভরশীল থাকলে দ্রুতই সে দেশের হালও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে। তাই দু দেশের মধ্যে মিলিটারি পার্টনারশিপ বাড়ানোর উপর জোর দিতে চাইছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, রাশিয়াও চায় দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের প্রভাব খানিকটা শেষ করে নিজেদের ক্ষমতা উত্থাপন করতে ।
উল্লেখ্য সম্প্রতি মিয়ানমারেও রাশিয়ার হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা গিয়েছে । তাই বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষায় সাহায্য করে মিয়ানমারেও নিজেদের আধিপত্য কিছুটা স্থাপন করতে চায় রাশিয়া সরকার । অন্যদিকে, বাংলাদেশেও নির্বাচন এর আগে যদি সেই দেশ আমেরিকা বা চিনের উপর নির্ভর করে থাকে তবে আন্তর্জাতিক মহলে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে । তাই পশ্চিমা সংস্কৃতি ও প্রভাবকে মোকাবিলা করতে রাশিয়ার ওপর সামান্য ভরসা করলে ক্ষতি নেই, এমনই কিছু কৌশল গ্রহণ করতে চলেছেন মোহাম্মদ ইউনুস, মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
কিন্তু, যেখানে দেখা গিয়েছে ভারত রাশিয়া ও আমেরিকা একত্রে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একের পর এক মাস্টার স্ট্রোক দিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন শত্রু দেশের বিরুদ্ধে। সেখানে রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছে আরো একবার চীনকে সাবধান করে দিল তার আধিপত্য বিস্তারে লাগান দেয়ার জন্য। অন্যদিকে পরোক্ষভাবে মোহাম্মদ ইউনুস কেও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে যাতে তিনিও চীনের দিকে ঝুঁকে নিজের অর্থনৈতিক পরিসর বৃদ্ধি করার অপচেষ্টা না চালায়।
Discussion about this post