মঙ্গলবারই ভয়ানক এয়ার টার্বুল্যান্সের মধ্যে পড়েছিল লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী একটি বিমান। মাঝ আকাশেই প্রবল ঝাঁকুনিতে কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বিমানের ভিতর। তাতে এক বিমানযাত্রীর মৃত্যু হয়, এবং আহত কমপক্ষে ৩০ জন। বুধবার ওই বিমানের বাকি যাত্রীদের সিঙ্গাপুর ফিরিয়ে আনে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের আরেকটি বিমান। এরপরই সেই বিমানে থাকা যাত্রীরা সেদিনের ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করলেন।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের SQ321 বিমানটি যখন প্রায় ৩৭ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ছিল। তখনই সেটি প্রবল এয়ার টার্বুল্যান্সে পড়ে। বিমানের ভিতর তখন ২১১ জন যাত্রী এবং ১৮ জন ক্রু সদস্য রয়েছেন। মাঝ আকাশে বাতাসের এক ঝটকায় বিমানটি প্রায় ৬ হাজার ফুট নীচে নেমে আসে। ফলে প্রবল ঝাঁকুনিতে বিমানের ভিতর কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে। বিমানের ভিতরই এক ৭৩ বছর বয়সী ব্রিটিশ যাত্রী মারা যান। যদিও পাইলট কোনও মতে বিমানটি রক্ষা করে ব্যাংককে জরুরী অবতরণ করায়। বুধবার ওই বিমানের বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ পেয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। সেই ছবিগুলি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ঠিক কি ভয়ানক অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিলেন সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ওই বিমানের যাত্রীরা।
বিমানের ভিতর কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। বিমানের সিটের উপর দিকে থাকা অক্সিজেন প্যানেল ভেঙে বাইরে ঝুলছে। উপরের ল্যাগেজ রাখার জায়গাও ভেঙেতুরে গিয়েছে। যাত্রীদের দাবি, উপর থেকে লাগেজ, ব্যাগ টিনের বা্ক্সের মতো ছিটকে এসে মাথায় পড়েছে। যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছেন, প্রবল ঝাঁকুনির জেরে সিটের উপরে থাকা অক্সিজেন প্যানেল এবং লাইটে বেশ কয়েকজন যাত্রীর মাথা ঠুকে গিয়েছিল। তাতে কয়েকজনের মাথাও ফেটে যায়। ওই বিমানে থাকা ২৮ বছরের এক ছাত্র সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনি নিজের চোখে এক যাত্রীকে কার্যত উড়ে গিয়ে বিমানের ছাদে ধাক্কা খেয়ে খুব বাজে ভাবে নীচে পড়তে দেখেছেন।
বিমানের ক্রু সদস্যদের দাবি, বিমানটি যখন এয়ার টার্বুল্যান্সে পড়ে, তখন বেশিরভাগ যাত্রীরই সিট বেল্ট বাঁধা ছিল না। আর এত কম সময়ে বিমানটি প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে নীচে নেমে আসে যে সকলে সিট বেল্ট বাঁধতেও পারেননি। ফলে এয়ার টার্বুল্যান্সে পড়ার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই যাত্রীরা ছিটকে পড়তে শুরু করে। কেউ কেউ নিজের সিটের তিন-চার সারি দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন। অনেকের মাথার উপর ব্যাগপত্র উড়ে এসে পড়তে থাকে। সেই সময় যারা বিমানটির টয়লেটে ছিলেন, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছেন। তাঁদের সকলেরই মাথা এবং শিড়দাঁড়ায় চোট লেগেছে। কারণ তাঁরা বিমানের টয়লেটে ঠিকঠাক ধরার মতো কিছু পাননি। আরও কিছু ছবিতে দেখা গিয়েছে, ওই বিমানে খাবার পরিবেশনের জন্য ব্যবহৃত ট্রলি, বাসনপত্র সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
Discussion about this post