নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী খুন। থানায় বসে এফআইআর কপি নিলেন শুভেন্দু অধিকারী। অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে সাযুজ্য খুঁজছেন অতীতের নন্দীগ্রামের। ২০০৭ সালের ১৪ ই মার্চ। বাম জামানার পূর্ব মেদিনীপুরের এক অখ্যাত গ্রাম উঠে এসেছিল খবরের শিরোনামে। ঘটনার সূত্রপাত সংশ্লিষ্ট বছরের ২ রা জানুয়ারি। সেদিন তৃণমূল সমর্থিত কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সিপিআইএম বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ৬ জন। এরপর আন্দোলন তুলতে ১৪ মার্চ বিশাল পুলিশ বাহিনী নন্দীগ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা বাধা দিলে শুরু হয় নির্বিচারে গুলি চালানো। মৃত্যু, রক্ত দেখে চমকে উঠে ছিল গোটা গ্রাম-বাংলার মানুষ। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ফোরফন্টে ছিলেন মমতা। তৎকালীন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। তিনি শুভেন্দু অধিকারী। ২০০৭ সালের ঘটনা ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর পাশে নেই। তিনি এখন বিরোধী দলনেতা। রাজ্যের বিজেপির বিধায়ক। সেই নন্দীগ্রাম থেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদে জয়ী।
পূর্ব মেদিনীপুরে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের মুখে আরও এক নন্দীগ্রাম ঘটনা। ভোটের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে উত্তপ্ত হয়ে উঠে নন্দীগ্রাম। বিজেপি মহিলা কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যে দলের নেত্রী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মা কে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় তাঁর ছেলেও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা নন্দীগ্রাম জুড়ে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় থানায় পৌঁছে গেলেন শুভেন্দু। আইসির বিরুদ্ধে আনলেন খুনে অভিযুক্তদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ। এফআইআর নম্বর না পাওয়া পর্যন্ত ঠায় বসে থাকলেন থানায়। শেষমেষ পেলেন নম্বর। ভোটের মুখে নন্দীগ্রামে ফিরল পুরনো স্মৃতি। থানা থেকে বেড়িয়ে রনংদেহী মেজাজে দেখা গেল শুভেন্দুকে
অনেকেই ২০০৭ ও ২০২৪ এর নন্দীগ্রামের মাঝে সাযুজ্য খোঁজার চেষ্টা করছেন। তবে এই দুই ঘটনার মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফাঁরাক। সেই সময় নন্দীগ্রাম আন্দোলন ছিল সরকারের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে। বাম আমলের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে জমি আন্দোলনকারীদের হত্যা করেছিল। আন্দোলনের পুরো প্রেক্ষাপটটাই ছিল জমি কেন্দ্রিক। এখানে কিন্তু তা নয়। পুরোটাই রাজনৈতিক হানাহানির ঘটনা। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠেছে এক বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ। ভোটের বাংলায় বলাবাহুল্য যা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ভোটের ব্যালটবক্সে তার প্রভাব পড়লেও এই একটি মাত্র ঘটনাকে সামনে রেখে বাংলার রাজনৈতিক পালাবাদল কার্যত অসম্ভব। মনে করছেন অনেকেই
Discussion about this post