একটা সময় নিয়ম ছিল সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ্যভাতা ৫০ শতাংশ পেরিয়ে গেলে তা মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ফলে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন বা বেসিক পে কিছুটা বেড়ে যায়। বর্তমানে সেই নিয়ম নেই। তবে এবার লোকসভা ভোটের পর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর আসতে পারে বলেই জোরালো জল্পনা চলছে। ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের জন্য ৪ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা বা ডিএ ঘোষণা করেছিল। ফলে ডিএ সিলিং বেড়ে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে। এবার সেটা মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বলেই আশা করছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে ১ কোটির বেশি সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০০৪ সালে পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ ছিল, ডিএ ৫০ শতাংশ স্পর্শ করলেই তা মূল বেতনের সঙ্গে একীভূত করার জন্য। কিন্তু পরবর্তী ষষ্ঠ এবং সপ্তম বেতন কমিশন এই ধরণের কোনও ব্যবস্থার সুপারিশ করেনি। তবে এটা বলা হয়েছিল, যে ডিএ ও মুল বেতন স্বয়ংক্রিয়ভাবে একীভূত হবে না। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে তা হতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারি সংগঠনগুলি অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই এই দাবি জানিয়ে আসছে। তাঁদের দাবি ছিল, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ মতোই ২০২৪ সালে ডিএ এবং মূল বেতন একীভূত করা হোক। কয়েকটি মিডিয়া রিপোর্ট দাবি করছে, লোকসভা ভোট মিটলেই নতুন সরকার এটা ঘোষণা করতে পারে।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মূল বেতন এবং মহার্ঘ্য ভাতার ফারাক ৫০ শতাংশ। আগামী জুলাইয়ে আবার ডিএ বৃদ্ধি ঘোষণা করলেই তা ৫০ শতাংশের মাত্রা অতিক্রম করবে। ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, পরবর্তী ডিএ বৃদ্ধির পরই মূল বেতন এবং ডিএ মার্জ হয়ে যাবে। ফলে মহার্ঘ্য ভাতা আবার শূন্য থেকে শুরু হবে। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকার বছরে দুবার ডিএ এবং ডিআর বৃদ্ধি ঘোষণা করে। অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সের (AICPI) ওপর ভিত্তি করে গণনা করা হয় মহার্ঘ্য ভাতা। সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডিয়ারনেস অ্যালাউন্স এবং পেনশনভোগীদের জন্য ডিয়ারনেস রিলিফ বা ডিআর দেওয়া হয়। প্রতি বছর জানুয়ারি এবং জুলাই মাসে ডিএ এবং ডিআর বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর ডিএ-এর ফারাক ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে যদি মূল বেতনের সঙ্গে মার্জ হয়ে যায়, তবে কর্মচারিদের বেতন বেড়ে যাবে। একইভাবে পেনশনের অঙ্কও বৃদ্ধি পাবে। এখন অপেক্ষা নতুন সরকার এই ঘোষণা করে কিনা।
Discussion about this post