রথযাত্রার আগে পুরীতে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথের চন্দন যাত্রা। বুধবার সন্ধ্যায় পুরীতে জগন্নাথের চন্দন যাত্রা উপলক্ষ্যে আতশবাজি প্রদর্শনীর সময় আগুন লেগে ঘটে গেল চরম বিপত্তি। মজুত করে রাখা আতশবাজিতে ভয়াবহ বিশ্ফোরণের জেরে ঝলসে গেলেন প্রায় ২৫ জন। এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। জখমদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনার পর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জগন্নাথ দেবের চন্দন যাত্রা বহু প্রাচীন একটি প্রথা। পুরীতে চন্দন যাত্রার আগে জগন্নাথ এবং তাঁর ভাই-বোনেদের ঐতিহ্যবাহী ‘চাপা খেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। সেই উপলক্ষ্যে এক বিশাল আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল পুরীতে। এর জন্য স্থানীয় একটি পুকুরের পাশে মজুত করা হয়েছিল বিপুল পরিমান আতশবাজি। তাতেই কোনওক্রমে আগুন লেগে যায় বলে জানা গিয়েছে। মজুত বাজিতে আগুন লেগে একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। সেই বিস্ফোরণের অভিঘাতেই ঝলসে যান বহু ভক্ত। আগুনে পুড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন ২৫ জনের বেশি। আহতদের দ্রুত স্থানীয় জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কটকের সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বুধবার রাতেই। পুরীর পুলিশ সুপার পিনাক মিশ্র জানিয়েছেন, স্থানীয় কয়েকজন বাজি ফাটাচ্ছিলেন, সেখান থেকেই আগুনের ফুলকি এসে পড়ে মজুত করে রাখা আতশবাজিতে। তাতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতি দিয়ে লেখেন, ‘‘পুরীর নরেন্দ্র পুকুরের কাছে দুর্ঘটনার খবর শুনে ব্যথিত। মুখ্যসচিব এবং জেলা প্রশাসনকে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার খরচ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া হবে। সবার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি”। অপরদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এই ঘটনায়। তিনিও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‘পুরীতে ভগবান জগন্নাথের চন্দন যাত্রার সময় বাজি বিস্ফোরণের ঘটনা জেনে হতভম্ব। বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। তাঁদের দ্রুত এবং সুস্থতার জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন। ওড়িশা সরকারের পাশে রয়েছি’’। ঘটনার পর থেকেই থমথমে হয়ে রয়েছে পুরী।
Discussion about this post