আমির খানের পিকে সিনেমার কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চই আমির খান এক এলিয়ান বা ভিনগ্রহীর চরিত্রে অভিনয় করে মন জয় করে নিয়েছিলেন। সেটা না হয় কল্প চরিত্র। কিন্তু একবার ভাবুন, যদি এই এলিয়ানরাই যদি আমার-আপনার আশেপাশে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ায়। তবে কেমন হবে সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এমনই এক তত্ত্ব সামনে আনা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, এলিয়ানরা আমজনতার ভিড়ে মিশে থাকতে পারে।
আপনাদের নিশ্চই আমির খান-অনুস্কা শর্মার সেই সুপারহিট সিনেমার কথা মনে আছে। যেখানে আমির একজন ভিনগ্রহী প্রাণীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। কথা বলছি বলিউডের বিখ্যাত পিকে সিনেমা প্রসঙ্গে। পিকে অর্থাৎ আমির খান এই সিনেমায় এক্কেবারে মানুষের মতোই রুপ বদলে এসেছিল মহাকাশের সুদূর কোনও গ্রহ থেকে। এ তো গেল সিনেমার গল্প। আজ আপনাদের এমনই এক সম্ভাবনার কথা শোনাবো, যা নিয়ে গবেষণা করেছেন পৃথিবী বিখ্যাত হাভার্ড এবং মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাঁদেরই গবেষণাপত্রে প্রকাশ পেয়েছে এমনই এক সম্ভাবনা। আমাদের পৃথিবীতে আনাচে কানাচে বা কোনও এক জনবহুল শহরে মানুষের ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতে পারে কোনও ভিনগ্রহী জীব বা এলিয়েন।
শুনলে অবাক লাগলেও এটাই ওই গবেষণার নির্যাস। আমির খানের পিকে সিনেমার মতোই কোনও ভিনগ্রহী প্রাণী বা এলিয়ান আমার-আপনার চারপাশে, আমজনতার ভিড়ে মিশে থাকতে পারে। তবে হাভার্ড এবং মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় এটাও উঠে এসেছে যে শুধু জনসাধারণের ভিড়েই নয় এলিয়ান্সরা মাটির নীচেও ঘাঁটি গেড়ে থাকতে পারে। যেমন কোনও আগ্নেয়গিরির অতল গহ্বরে। আবার পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদেও থাকতে পারে তাঁদের আস্তানা। সম্প্রতি হাভার্ড এবং মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ের “হিউম্যান ফ্লারিশিং প্রোগ্রাম”-এর অন্তর্গত এক গবেষণায় এমনই এক চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
এই গবেষণাপত্র যে বিশ্বের তামাম বিজ্ঞানীমহল আজগুবি বলে উড়িয়ে দেবেন তা বিলক্ষণ জানেন এই গবেষণার তিন মূল গবেষক। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম লোমাস, ব্রেন্ডান কেস এবং মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ের পল মাস্টার্সের বক্তব্য, মহাকাশের অপরিচিত কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হল, কনভেনশনাল টেরেস্ট্রিয়াল এক্সপ্লানেশন অর্থাৎ, মানুষের তৈরি প্রযুক্তির কারণেই ইউএফও-র আগমন। অন্যটি হল, এক্সট্রা টেরেস্ট্রিয়াল এক্সপ্লানেশন অর্থাৎ, মহাবিশ্বের কোথাও আরও উন্নত সভ্যতার প্রতিনিধিদের আগমন। আমাদের গবেষণাপত্রে মূলত মহাকাশের অপরিচিত কর্মকাণ্ডের একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ‘দ্য ক্রিপ্টোটেরেস্ট্রিয়াল হাইপোথেসিস: এ কেস ফর সায়েন্টিফিক ওপেননেস টু আ কনসিল্ড আর্থলি এক্সপ্লানেশন ফর আনআইডেন্টিফায়েড অ্যানোমেলাস ফেনোমেনা’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে ইউএফও বা ইউএপি নিয়ে একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
এই অদ্ভুত গবেষণায় গবেষকরা মূলত এলিয়েনদের নিয়ে একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এলিয়েনরা যে মানুষের ভিড়ে মিশে রয়েছেন তাঁকে গবেষকরা ‘ক্রিপ্টোটেরেস্ট্রিয়াল’ থিওরি বলছেন। মূলত চারটি হাইপোথিসিসের ওপর ভিত্তি করেই এই দাবি করছেন গবেষকরা। প্রথমটি হল, সম্পূর্ণ ভিন্ন টাইম পিরিয়ড বা ভিন্ন কোনও গ্রহ থেকে এসেছেন এই এলিয়েনরা, এবং মানুষের ভিড়েই নিজেদের মিশিয়ে রেথেছেন। দ্বিতীয়টি হল, মানুষ ছাড়া অত্যন্ত বুদ্ধিমান একটি প্রজাতি এই পৃথিবীতে এসেছিল বিবর্তনের মাধ্যমে। তাঁরা এখনও পৃথিবীতেই আত্মগোপন করে রয়েছেন মাটির নীচে বা আগ্নেয়গিরির গহ্বরে। গবেষণাপত্রে ইঙ্গিত করা হয়েছে, এরা অজানা কোনও প্রাণী বা ডাইনোসরের বংশধর, অনেকটা বাঁদরের মতো দেখতে কিন্তু মানুষের থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমান। তৃতীয়ত, এই ক্রিপ্টোটেরেস্ট্রিয়ালরা আপাত দৃষ্টিতে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া কোনও উন্নত সভ্যতার অবশিষ্ট অংশ। যারা এখনও কোনও না কোনও ভাবে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছেন। আর চতুর্থত, অতিপ্রাকৃত গোত্রের কোনও জীব বা পরী জাতীয় কিছু, যারা কোনও এক সময় পৃথিবীতে এসেছিলেন। যদিও চতুর্থ ভিত্তিটি এই গবেষকদল নিজেরাই খুব একটা জোর দিচ্ছেন না। কারণ, এই থিওরি বিজ্ঞানীমহলে খুব একটা কদর পাবে না। কিন্তু গবেষকদল গবেষণাপত্রের সঙ্গেই আবেদন করেছেন, তাঁদের গবেষণাপত্রটি জ্ঞান থেকে প্রাপ্ত নম্রতা এবং খোলা মন নিয়ে বিবেচনা করতে।
Discussion about this post