ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। শনিবার সকালে বাইপাসের ধারে এক বিলাসবহুল হোটেলে সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান বিচারপতি যান দক্ষিণেশ্বরে। সেখান থেকে বেলুড় মঠে মিশনের প্রেসিডেন্ট মহারাজের সঙ্গে দেখা করেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। মন্দিরে তার আগমন উপলক্ষে শনিবার বিকেলে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের চারপাশে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছিল। মন্দিরে প্রধান বিচারপতির পরনে সাদা কুর্তা-পাজামা, সোনালি উত্তরীয়।
মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে ডালা-সহকারে পুজো দেন প্রধান বিচারপতি। এরপর দক্ষিণেশ্বর থেকে তিনি চলে যান বেলুড় মঠে। তাঁকে স্বাগত জানান মঠের সন্ন্যাসীরা। মঠ পরিদর্শন করে ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব ও সারদা দেবীর ঘরে গিয়ে প্রণাম সারেন প্রধান বিচারপতি। সেখান থেকে তিনি যান প্রেসিডেন্ট মহারাজ গৌতমানন্দজি মহারাজের ঘরে। তাঁকে প্রণাম করে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। এদিন কলকাতার এই অনুষ্ঠানে দেশের প্রধান বিচার বলেন, বিচারব্যবস্থা মন্দির হলেও বিচারকদের দেবতা ভাবা ঠিক নয়। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, “আদালতকে বলা হয় ন্যায় এবং বিচারের মন্দির। আমরা নিজেদেরকে সেই মন্দিরের দেবতা ভেবে ভুল করি। এটা খুব বিপদের। মনে রাখতে হবে আমাদেরও নিজস্ব চিন্তাভাবনা রয়েছে।
সেই চিন্তাভাবনার সঙ্গে বিচারকে গুলিয়ে ফেললে হবে না।” প্রধান বিচারপতি বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলকে মনে করিয়ে দেন, ‘‘সাংবিধানিক নৈতিকতা বলে বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করো এবং সহনশীল হও। আমার সামনে আদালতকে কেউ মন্দির বললে আমি তাঁদের বাধা দিই। কারণ, মন্দির বললেই মনে হয় বিচারকরা দেবতা। কিন্তু তা নয়, বিচারকরা মানুষের সেবক।” প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, “বিচারকরা বিচার করুন, কিন্তু অন্যের সম্পর্কে আগেভাগে কোনও ধারণা তৈরি করে ফেলবেন না। সহানুভূতি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের সামনে যাঁরা দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁরাও মানুষ।’
Discussion about this post