যে জনপ্রিয়তা নিয়ে আইপিএল শুরু হয়েছিল, এতবছর পার করেও ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তা তুঙ্গে। এখানে শুধুই ক্রিকেট খেলা হয় না। আইপিএল বিনেোদনের সঙ্গে রীতিমত বানিজ্যিক ভাবেও সফল, বলতে গেলে বানিজ্যিক দিকটি এত বেশী প্রস্ফুটিত যে দেশ বিদেশ সর্বত্য আইপিএলের দাবদাবা। এখানে ক্রিকেটারদের জন্য যেমন অর্থ এবং নাম যশ আছে তেমন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির নিজেদের পণ্যকে বহু মানুষের কাছে তুলে ধরার ভীষণ ভালো সুযোগ থাকছে। আর আইপিএলে দলের সব বিষয়ে মালিকদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন দলের মালকিনরা। এখন সকল ফ্র্যাঞ্চাইজিরাই চাইছে তাদের দল কে সেরা দলে পরিণত করতে। তাই নিলামের আগে সব ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকেরা এক জায়গায় হয়ে কিকি করলে সুবিধা হয়ে তা বোর্ডকে জানানোর জন্য হাজির হয়েছিলেন। বহুবার এমন হয়েছে আইপিএল খেলার জন্য নিলামে নাম দিলেও প্রতিযোগিতা শুরুর আগে সরে যাওয়ার ঘটনা বার বার ঘটেছে। বিভিন্ন ক্রিকেটার হঠাৎ করে আইপিএল শুরুর আগে সরে গিয়েছেন। এই প্রবণতা বন্ধ করতে চাইছে আইপিএলের দলগুলি। সেই কারণে নতুন নিয়ম আনার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। গতবুধবার আইপিএলের দলগুলির বৈঠক ছিল। সেখানে বেশ কিছু দল একটি প্রস্তাব দিয়েছে। নিলামে কোনও বিদেশি ক্রিকেটারকে কেনার পর তিনি আইপিএলে না খেললে সেই দলকে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই কোনও ক্রিকেটার এমন ভাবে সরে গেলে তাঁকে আইপিএল থেকে দু’বছরের নির্বাসিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সব দলগুলিই এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। তবে নিয়ম হিসাবে এটা কার্যকর হবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
তবে কোনও ক্রিকেটার যদি দেশের জন্য খেলতে যান, বা চোট পেয়ে খেলতে না পারেন, বা পরিবারের কারও সমস্যার জন্য নাম সরিয়ে নিতে বাধ্য হন, আইপিএলের দলগুলি তাঁকে ছাড়তে রাজি আছে। অন্যথায় তাকে শাস্তি দিতে হবে বলে মত ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকদের।
এখন আগামী মরসুমের আগে আইপিএলের বড় নিলাম। তার আগে বৈঠকে বসেছিলেন দশ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিকেরা। সেখানে বিভিন্ন নিয়ম নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের। নিলামের আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে দু’টি পরামর্শ দিলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মালকিন। আসুন জেনে নিই, কী বললেন কাব্য মারান? কাব্যের মতে, আইপিএলে প্লেয়ার ধরে রাখার নিয়মে বদল করা যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত নিয়ম, চার জন ক্রিকেটার ধরে রাখতে পারবে প্রতিটি দল। তাদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ খরচ করতে পারবে তারা। কাব্য জানিয়েছেন, চারের বদলে ছ’জন ক্রিকেটার ধরে রাখার ক্ষমতা দলগুলিকে দেওয়া উচিত।
বৈঠক শেষে হায়দরাবাদের মালকিন বলেন, “আমরা ছ’জনকে ধরে রাখতে পারি। সে ক্ষেত্রে দু’জনকে রাইট টু ম্যাচ কার্ডে নেওয়া যেতে পারে।অর্খাৎ কোনও ক্রিকেটারের নিলাম হয়ে যাওয়ার পরে সেই টাকাতেই তাঁকে পুরনো দল নেবে। আবার অনেক সময় কোনও ক্রিকেটার তাঁর দামে খুশি হন না। কিন্তু তিনি সেই দলেই খেলতে চান। সে ক্ষেত্রে সেই ক্রিকেটার নিলামে গেলেন। সেখানে যে টাকা তিনি পেলেন সেই টাকাতেই পুরনো দল তাঁকে ধরে রাখল। একে একটি কোর দল ধরে রাখা হল। আবার সেই ক্রিকেটারও বেশি টাকা পেলেন।”
প্রত্যেক বারের নিলাম শেষে দেখা যায়, কিছু খেলোয়াড় খেলতে আসেন না। তাঁরা ব্যক্তিগত বা অন্য কারণ দেখান। সে ক্ষেত্রে শাস্তির প্রস্তাব দিয়েছেন কাব্য। তিনি বলেন, “যথাযথ কারণ ছাড়া নিলামে দল পাওয়ায় পরে যদি কোনও খেলোয়াড় না আসেন তাঁ হলে তাঁকে আইপিএল থেকে নির্বাসিত করা উচিত। কারণ, ক্রিকেটার কেনার সময় দলগুলোর একটা ভাবনা থাকে। সেই ক্রিকেটার না এলে সমস্যা হয়। ক্রিকেটারদের সেটা বুঝতে হবে।”
২০১৬ সালে শেষ বার আইপিএল জিতেছিল হায়দরাবাদ। গত বার ফাইনালে উঠেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে হারতে হয়েছে তাদের। আগামী নিলামের আগে তাই আরও শক্তিশালী দল তৈরির পরিকল্পনা করেছেন কাব্য। এখন দেখার নিলামের আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড হায়দরাবাদ মালকিনের কোন পরামর্শ মেনে নেন কিনা।
Discussion about this post