কোথাও কোনও গাড়ি বা বাইক রাখলে পার্কিং ফি দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। সেই পার্কিং ফি ঘণ্টা বা দিনের হিসেবে নেওয়া হয়। আবার দীর্ঘমেয়াদী গাড়ি রাখতে গেলে মাসিক চুক্তিও হয়। কিন্তু ধরুণ বছরের পর বছর যদি পার্কিং ফি জমা না দিয়ে কেউ গাড়ি বা বাইক রেখে দেয় তাহলে কত টাকা বকেয়া হতে পারে? যেমন ছত্তিসগড়ের রায়পুর বিমানবন্দরে এমনই এক পার্কিং ফি বকেয়ার গল্প আজ শোনাবো, যেখানে বকেয়ার অঙ্ক ছুঁয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। না এটা কোনও গাড়ি বা বাইকের পার্কিং নয়, বরং আস্ত একটি বিমানের। ওই বিমানটি ৮ বছরের বেশি সময় ধরে ওই বিমানবন্দরের পার্কিং বে এলাকা দখল করে দাঁড়িয়ে আছে। কারও কোনও হেলদোল নেই বিমানটি নিয়ে যাওয়ার।
২০২৫ সালের ৭ আগস্ট, সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ছত্তিসগড়ের রায়পুরে স্বামী বিবেকানন্দ বিমানবন্দরে এমারজেন্সি ল্যান্ডিং করেছিল ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি বিমান। জানা যায় মাঝ আকাশে বিমানটির একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়েছিল। তাই তড়িঘড়ি বিমানের পাইলট যোগাযোগ করেছিল ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। এরপর সবচেয়ে কাছের রায়পুর বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণের অনুমতি মেলে। বিমানটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ওমানের মাস্কট শহরে যআচ্ছিল। জরুরী অবতরণএর পর ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ অন্য একটি বিমান এনে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ওই বিকল বিমানটি আর নিয়ে যায়নি। এরপর কেটে গিয়েছে ৮ বছর। ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং রায়পুর বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বারবার যোগাযোগ করেছেন বাংলাদেশের ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, অন্তত ৫০ বার তাঁরা চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের বিমান সংস্থাকে। কিন্তু বারবার সময় চেয়েও বিমানটি নিয়ে যাওয়ার কোনও উদ্যোগ নেয়নি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। ফলে রায়পুরের অপেক্ষাকৃত ছোট বিমানবন্দরটির একটি পার্কিং বে আটকে পড়ে আছে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে। আর পার্কিং ফি বকেয়া হয়ে গিয়েছে ৮ কোটি টাকার বেশি। সবমিলিয়ে মহা ফাঁপড়ে পড়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, রীতিমতো আইনি নোটিশ দিয়েও কোনও সাড়া মেলেনি এবং পার্কিং ফি-ও পরিশোধ করেনি বিমান সংস্থা।
Discussion about this post