সত্যিই কি বাংলাদেশে পালাবদল হতে চলেছে? কারণ পর পর বাংলাদেশে ঘটে চলা ঘটনা প্রবাহ এই প্রশ্নটাই উস্কে দিচ্ছে। বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, সেনাদের টহলদারি। সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে তারা। তবে কি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দখলে চলে গেল?
সম্প্রতি সেনানিবাসে কয়েকটি পরপর বৈঠক হয়েছে। যে বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। উপস্থিত ছিলেন বহু সেনাকর্তা। আসলে বাংলাদেশ এখন যে সময়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে ফের পালাবদল হতে পারে। তবে আর কোনও নির্দিষ্ট ব্যাক্তির হাতে নয়, ক্ষমতা যেতে পারে দেশের মেরুদণ্ড সেনার হাতে। যদিও পূর্বে একাধিকবার সেনা অভুত্থান হয়েছে বাংলাদেশে। এমনকি হাসিনা সরকারের পতনের পর কয়েকদিন সেনার দখলেই ছিল বঙ্গবন্ধুর দেশ। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়ার পর দেশের পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। জানি শুধু ভারত নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী দেশ ও সরব হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের নির্বাচনী প্রচারে বাংলাদেশের কথা তুলে ধরছেন। তার জমানার মার্কিন গোয়েন্দা মহাপরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড ভারত সফরে এসে নয়া দিল্লিতে বসে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আর এরমধ্যেই শেখ হাসিনার দেশে ফার্স নিয়ে জল্পনা শুরি হয়েছে। তিনি নাকি এখন দিল্লিতে নয়, কলকাতাতে রয়েছেন। এমনটাই খবর উঠে আসছে। তবে কি হাসিনার দেশে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা?
সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কোনওরকম ভনিতা না করে জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনও পরিকল্পনা নেই। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস দল যখন সাক্ষাৎ করতে যায় তখন একথা বলেন ইউনূস। এই দল আগে জানিয়েছিল, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে বাংলাদেশকে। অন্তত বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য। কারণ তখন প্রবলভাবে ভারত বিদ্বেষ জাগ্রত ছিল। পরবর্তীকালে দেখা গিয়েছে, মোহাম্মদ ইউনুস চেষ্টা করেছেন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে। তারপরই এই সরকার স্পষ্ট করে দিল, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোন পরিকল্পনা নেই সরকারের। তবে কি শেখ হাসিনা দেশে ফিরছেন? তার দেশে ফেরা কি এবার সময়ের অপেক্ষা? এ সমস্ত জল্পনার মাঝে, এরপরই হাসনাত আব্দুল্লাহ পর পর ফেসবুকে দুটি পোস্ট দেন। প্রথম পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ৫ ই আগস্টের পর আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার পালা। এরপর হঠাৎ আরো একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন ফেসবুকে। তার মধ্যে বেশ কিছু স্পর্শ কাতার তথ্য সামনে তুলে ধরেছেন হাসনাত। তিনি সেখানে উল্লেখ করেছেন, ১১ই মার্চ ক্যান্টনমেন্টে একটি মিটিং হয়েছে। সেই মিটিংয়ে চাপ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, একটি রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ আসবে। সেই দলটি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। সেই মিটিংয়ে বহু তর্কাতর্কি হয়। এবং তারপরে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। তারপরে দেখা গিয়েছে, হাসনাতদের তরফে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য বহু মিছিল, বিক্ষোভ। মূলত তারপর থেকে সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধ চরমে ওঠে।
ফলে অত্যন্ত জটিল পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি। তার ওপর হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। হঠাৎ তার এই পোস্টে সেনানিবাসের বৈঠক, সরকারের অন্দরে গোপন কথা, যা সাধারণ মানুষের জানার কথা নয়, সে সমস্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়ে বিস্ফোরক পোস্ট দিয়ে ফেললেন হাসনাত। তবে বক্তব্য একটাই, সেনাপ্রধান উল্টো চাল শুরু করলে, কি করবেন ছাত্র নেতারা?
Discussion about this post