দেশে ফিরছেন শেখ হাসিনা! বাংলাদেশ ইস্যুতে এটি একটি আলোচ্য বিষয়। এবার সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনার বিচারের দিনক্ষণ কার্যত ঠিক করে দিলেন চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাজুল ইসলাম। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের ‘অপরাধের’ বিচারও এই বছরই হবে বলে ওই বৈঠকে দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ জুড়ে অস্থির পরিস্থিতি, ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতন, তদারকি সরকার প্রতিষ্ঠা, দিকে দিকে সংখ্যালঘু ও হিন্দুদের ওপর নির্যাতন, সন্ত্রাস আবার বিভিন্ন মহলের ভারত বিদ্বেষী হুকার। পদ্মায় বয়ে গিয়েছে অনেক জল। তবে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ এখনও স্পষ্ট ওপার বাংলায়।
অন্তরবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার ১০০ দিনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাসনে প্রধান উপদেষ্টা জানান ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর আবেদন করা হবে। এরপর ইন্টারপোলে রেড কর্নার নোটিশ জারি করে গ্রেফতারি পরয়োনা জারিও করা হয়েছিল। আবার এই প্রত্যর্পন প্রসঙ্গে নোট ভারবাল ও দেওয়া হয়েছে ভারতকে।
উল্লেখ্য নতুন বছরেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ফের সুর চড়াল বাংলাদেশ। চলতি বছরেই জুলাই গণহত্যার বিচার হবে , দাবি ওপার বাংলার চিফ প্রসিকিউটরের। এমনকী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বিগত ১৫ বছরের ‘অপরাধের’ বিচারও এই বছরই হবে বলে দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিক বৈঠক থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর সঙ্গে হাসিনা প্রসঙ্গে সুর চড়িয়ে হাসিনার বিচারের দিনক্ষণ কার্যত ঠিক করে দেন চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির সম্মতির পর মূল ভবনে বিচার কাজ শুরু হবে। বিগত শাসন কালে আওয়ামী লীগের সরকার যত অপরাধ করেছে, তার বিচার প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের তদন্তপ্রক্রিয়াও চলছে বলে জানান তিনি ।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের দাবি করেছেন , আওয়ামী লীগ ও হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলির বিচারপ্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতেই তৎপরতার সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরত চায় তারা। সেই জল্পনার আবহে চিফ প্রসেকিউটরের এমন মন্তব্য যেন আরও কিছুটা জোড়ালো করে তুলল হাসিনার দেশে ফেরার জলপনাকে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে হাসিনাকে দেশে ফেরাতে গোপনে কোনও চাল চালছে বাংলাদেশ।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক ধারার ভিত্তিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুন্যাল। তার বিরুদ্ধে জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরয়ানাও। হাসিনাকে দেশে ফেরত আনতে নয়াদিল্লির ওপর ভরসা করে আছে ইউনূস সরকার। কিন্তু এখনই কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ সাউথ ব্লক।
প্রসঙ্গত, বছর শেষের আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ নিয়ে বিতর্ক দেখা যায় ছাত্রদল ও ইউনূস সরকারের মধ্যে। অবশেষে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানায় ছাত্রনেতারা। পাশাপাশি দাবি জানায়, আগে শেখ হাসিনার বিচার, তারপর দেশে নির্বাচন। তাদের দাবি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধের ভিত্তিতে হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারপরই দেশে নির্বাচন সম্ভব।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই চিফ প্রসিকিউটর জানিয়েছিলেন ইন্টারপোলে রেড কর্নার নোটিস জারির মাধ্যমে হাসিনা সহ পলাতক আসামিদের ফেরত আনতে চায় সরকার। গত ১০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ভারতে চলে আসা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে চিঠি দিয়েছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এবার দেখার শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আর কি পদক্ষেপ নেই বাংলাদেশ।
Discussion about this post