শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের গঠন হয়েছিল নতুন অন্তর্বর্তী সরকার, সেই সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল বৈষম বিরোধী ছাত্র নেতারা তিনজন সমন্বয়ক অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলিও। কিন্তু বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। যেমন এই সরকার কি নিরপেক্ষ? এ প্রশ্ন উঠছে কারণ, ছাত্র নেতারা বলছেন নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করবেন। বিএনপি সহ আরও রাজনৈতিক দলগুলি বলছেন যে ক্ষমতায় থেকে দল তৈরি কেন ক্ষমতা থেকে বেরিয়ে এসে দল তৈরি করা হোক। তবে এখন ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস। তিনি বলছেন ছাত্রদের সমর্থন করুন। কারণ ছাত্ররা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে এবার ছাত্রদের জন্য তিনি কিছু করতে চান অর্থাৎ গিভ এন্ড টেক পলিসি। এবার বিষয়টা এরকম কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আর এই প্রশ্ন ওঠার মানেই সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা।
বর্তমানে অন্তর্ভুক্তি সরকারের চিরশত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। আর অন্তর্ভুক্তির সরকারের যারা অংশ তারা প্রতিমুহূর্তে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছেন আদালতে গিয়েছেন যদিও সেখানে গিয়েও কোন লাভ হয়নি, সমর্থন করেনি তাই বিএনপির ওপরও তারা যথেষ্ট ক্ষিপ্ত। বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের চোখ রাঙানি বিএনপিকে।
পরিস্থিতিতে বিএনপির দ্রুত নির্বাচনের কথা বলছে আর ছাত্র নেতারা তার বিরোধিতা করছে। বলছেন সংস্কার আগে তারপর সবকিছু। তবে তাদের যে মানসিকতা বা চিন্তাধারা সবটাই এখন স্পষ্ট বাংলাদেশের নাগরিকের কাছে। ছাত্ররা ভাবছে সংস্কারের নামে নির্বাচনে বিলম্ব করে তারা একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করে ফেলবেন এবং যেভাবেই হোক ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবেন। এবার মোহাম্মদ ইউনুস তিনি জানাচ্ছেন তিনি ছাত্রদের সুবিধা করে দেবেন। কিভাবে তিনি সুবিধা করবেন? তিনি কি ছাত্রদের নতুন দল তৈরি করতে সমর্থন করবেন নাকি যখন ছাত্ররা নতুন দল তৈরি করবেন তখন তিনি চুপচাপ বসে থাকবেন। এমনকি প্রশ্ন উঠছে যে নির্বাচন হলে কোন রকম এখানে কোনরকম কারচুপি হবে কিনা। আর এই সমস্ত বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি অনেকটাই কঠোর হয়েছে। এখন সবকিছু মিলিয়ে খুব একটা সুবিধাজনক পরিস্থিতি নেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে। কার্যত নির্বাচন হবে কিনা? হলেও সেটা কতটা স্বচ্ছ নির্বাচন হবে? আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা? নাকি এখানে সবটাই পূর্বপরিকল্পিত হবে এবং সেটাই মঞ্চস্থ হবে নির্বাচনে এই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এখন জলখোলা হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি।
পরিস্থিতিতে এখন সাধারণ মানুষ বুঝে উঠতে পারছেন না যে কি হতে চলেছে। এমনিতেই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি, শিল্প কারখানা বন্ধ, পুলিশ নেই এরকম বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। আর এত কিছুর পরে অন্তর্ভুক্তির সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনুস সত্যিই কি দেশ শাসন করতে পারবেন? নাকি পালিয়ে গিয়ে তিনি বাঁচার চেষ্টা করবেন এখন সেটাই দেখার।
Discussion about this post