হাসনাত আবদুল্লা, বাংলাদেশের ছাত্রনেতা এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির অন্যতম নেতা, দেশের পরিস্থিতি নিয়ে জনগন যখন উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে মূল্যবৃদ্ধির জেরে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। হাসিনার আমলে যা দুর্ণীতি ছিল, বর্তমানে দূর্ণীতি সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। তখন দিশেহারা হয়ে,মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ঘুরিয়ে দিতে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ করেছেন হাসনাত।কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন নি ঢিলটা কোথায় ছোড়া উচিৎ আর তিনি কোথায় ছুড়েছেন।ফলে তিনি এখন ভয় পাচ্ছেন তার ভবিষ্যতে কি পরিনতি হবে। যদিও তিনি মানুষের সামনে এমন ভাব করছেন যেন বিরাট বীর পুরুষ। সে আপনি বীর পুরুষ হতেই পারেন তবে আপনার কিছু উত্তরসূরীতো আছেন, বর্তমানেও কিছু মানুষ আপনার মতই নিজেকে সাহসী প্রমান করার জন্য কত কিছুই না বলেছেন। সেনবাহীনি তাদের তুলে নিয়ে যায়নি, শুধু সমাজ মাধ্যমে মিথ্যে প্রচার হয়ে গিয়েছিল যে তাদের সেনা তুলে নিয়ে গেছে, তার পর থেকেই মিডিয়াতে তাদের কথা বলার ধরনটা একবার দেখবেন।
সমাজ মাধ্যমের কয়েকটা মিথ্যে পোস্ট তাদের ভিতরের সব জল শুকিয়ে দিয়েছে, সেনা তুলে নিয়ে গেলে তাদের অবস্থা কি যে হত, কে জানে। এখন আপনি এই অল্প বয়সে যে টাকার মালিক হয়েছেন, যেখানে আপনার সহযোদ্ধারা অনেকেই বলেছেন যে আপনাদের নিজেদের কাছে চা খাওয়ার মতও টাকা ছিল না। সে যাক ক্ষমতা থাকবে আর টাকা পয়সা থাকবে না, তা কি হয়। এতে অন্যায়ের কিছু নেই বর্তমান সমাজে। আপনারা বলেছেন আপনাদের আন্দোলনে খরচ হওয়া টাকার সোর্স আপনারা বলবেন না। তা বেশ আরও অনেক কিছুই আপনারা বলবেন না। এই না বলাটা সমস্যা হবেনা ততদিন, যতদিন আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন।
এবার বলি এগুলি বলছি কেন। আসলে সেনা চাইলে এখনই এগুলির জবাব দিতে বাধ্য করতে পারে। জানি আপনাদের সেনপ্রধান এখনই এই কাজ করবেন না। কারণ তিনি জানেন ইনক্লুসিভ ভোট হলে কে ক্ষমতায় আসবে। আর যে আসবে সেই আপনাদের থেকে এর তথ্য আদায় করে ছাড়বে। পরে আনাদের কি হবে আপনারা বুঝবেন। এখন আসি মূল বিষয়ে। মানে আপনার সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে। আপনি দাবি করেছেন যে সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র করছে। মানে সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগের একটি “পরিশোধিত” সংস্করণ তৈরি করে তাদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। যদিও আপনার প্রিয় সহযোদ্ধা অন্য কথা বলছেন। আপনারা দেশের ৩০থেকে ৪০ শতাংশ মানুষকে, দেশের জনগন হিসাবে নাই দেখতে পারেন। কিন্তু তারা দেশবাসী, তাদের অধিকার দখলদারী সরকার না মানলেও সেনাপ্রধান মানতে বাধ্য, কারণ হাসিনার থেকে দায়িত্ব নিয়ে আপানাদের হাতে দেওয়ার কাজটি, মাঝে থেকে যিনি করেছেন, বা যাকে বিশ্বাস করে জনগন কোন বিশৃঙ্খলা করেন নি, তিনি হলেন সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান।তাই তার এবিষয়ে দায় এবং দায়িত্ব দু-টোই থেকে যায়। আপনারা বলেছেন আওয়ামীলীগ কে ?
তাদের হারিয়েই তো আমরা এই উত্থান ঘটিয়েছি। কিভাবে হারালেন, ভোটে তো হারান নি।হারিয়েছেন বিদেশী ফান্ড আর সন্ত্রাসীদের সাহায্যে। যদি ভোটেও হারাতেন, তাহলেও গনতন্ত্রে বিশ্বাসী কেউ হেরে যাওয়া মানুষের উপর অত্যাচার করতে পারে না। আর সেটা সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বা তার দল, য়ে কেউই এটা করে থাকলে তা মানবতা বিরোধী এবং এই মঞ্চ থেকে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হাসনাত আপনি দ্বিতীয় অভিযোগ করেছেন যে সেনাবাহিনী তাদের নির্ধারিত ভূমিকা ছাড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে। আপনি সেনাবাহিনীকে ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। আপনার এই আহ্বান সেনপ্রধান মানবেন কেন। যতক্ষন না নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, ততক্ষন তিনিই হলেন প্রধান পর্যবেক্ষক, যিনি সাধারনের পক্ষ্যে থেকে, আপনাদের দখলদারী সরকার ভুল এবং ঠিক,কি করছেন তা গভীরভাবে নজরে রাখবেন। এবং কিছু ভুল হলে, তার প্রতিবাদ নয়, প্রতিকার করবেন। মনে রাখবেন আপনি আন্দোলোন করেছেন, কোন সরকারী পদে না থেকে, কিন্তু সেনাপ্রধান সরকারী পদে থেকে আপনাদের সমর্থন করেছেন। এর জন্য তার কোর্ট মার্শালও হতে পারত। এর পরে আসি আপনি এবং আপনার সহকর্মী সারজিস আলম সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে।
আপনি দাবি করেছেন যে ঐ বৈঠকে সেনাবাহিনী আপনাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য। এবার উত্তরে আসি, এখন পর্যন্ত আপনি কতগুলো দেশের প্রধানদের মুখোমুখি হয়ে, আপনারা যে ঘটনাগুলি ঘটিয়েছেন তার জবাব দিয়েছেন। গনঅভ্যুত্থানের প্রশংসার থেকে- বেশী সমালোচিত হচ্ছে গনহত্যা আর সংখ্যালঘুদের উপরের অত্যাচারের জন্য। ওপেন ফোরামে ট্রাম্প যদি তার কট্টর বিরোধী বাইডেনকে সমর্থন করে বলতে পারেন যে বাংলাদেশের ঘটনায় ড্রিপ স্ট্রেটের হাত নেই, তাহলে ভাবুন তার প্রধান সহযোগী এবং নিজের দলের নির্ভয়যোগ্য নেতা তুলসী গ্যাভার্ডের কথাকে কতটা গুরুত্ব দিবেন। এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে সেনাপ্রধান এবং প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টাদের। তাই আপনাকে চাপ নয় সেনাপ্রধান অর্ডার করলেই যথেষ্ট।আপনি আরও বলেছেন যে সেনাবাহিনী গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে যে ভুমিকা পালন করেছে,তা প্রশ্নবিদ্ধ এবং ছাত্র আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যদিও এই অভিযোগগুলো সেনাবাহিনী সরাসরি অস্বীকার করেছে এবং তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে এগুলো “অপরিপক্ক এবং হাস্যকর” গল্পের মতো।
এই মঞ্চ থেকে আমরা আপনাকে বলতে চাই, ছাত্রআন্দোলনে যদি সেনা কোন অত্যাচার অমানবিকতার জায়গা থেকে করে থাকে, তাহলে আমরা তার প্রতিবাদ করছি, এবং সঠিক বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা উচিৎ, এই দাবীও জানাচ্ছি। সঙ্গে এটিও দেখা উচিৎ এই আন্দোলোন শুরুতে কোটা বিরোধী আন্দোলন থাকা স্বতেও কখন কোন পরিস্থিতে এবং কাদের নির্দেশে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে রূপান্তরিত হল। কারণ এই আন্দোলনে অনেক অনৈতিক ঘটনাও ঘটেছে। সব মিলিয়ে বলব আপনি নিজেকে সবকিছুর উর্দ্ধে ভাববেন না। আর চেষ্টা করবেন এখন থেকে সৎ থাকার এবং সংযত থাকার।
Discussion about this post