সকালে উঠেই চা বা কফিতে চুমুক না দিলে বাঙালির ঘুম ভাঙ্গে না। কফিতে ক্যাফিন নামক উত্তেজক পদার্থ থাকে। যা আমাদের শরীরের উত্তেজনার সৃষ্টি করে। অত্যন্ত ভালো উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে। সাধারণত সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আমরা কফিতে চুমুক দেই। কিন্তু এই অভ্যাস আমাদের শরীর-স্বাস্থকে দফারফা করে দিতে পারে। সকালে ব্রেকফাস্ট না করে কফি খাওয়া শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কফি খেলে কর্টিসোলে হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। কর্টিসোলে হরমোনের ক্ষরণের পরিমান বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। হরমোনের স্বাভাবিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। অন্যদিকে পাচন ক্রিয়ার স্বাভাবিক ছন্দ বিঘ্নিত হতে পারে। ফলে গ্যাস, অম্বল, পেট খারাপের মতন সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে চিনি ও দুধ দিয়ে তৈরি কফি খান। যা আমাদের শরীরের জন্য আরো ক্ষতিকর। এটি শরীরে শর্করার লেভেলকে অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে। তাছাড়া খালি পেটে কফি আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। ডি-হাইড্রেশনের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
বর্তমানে কফি একটি বৈশ্বিক পণ্য। উত্তেজক পানীয় হিসাবে বিশ্বের সর্বত্র ব্যাপক পরিচিতি আছে। কফিতে উপস্থিত ক্যাফিন আমাদের শরীরের উত্তেজনা তৈরী করে। সাথে কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু খালি পেটে কফি আমাদের শরীরে উপকারের বদলে অপকার করে বেশি। ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে আমাদের শরীরে কর্টিসোলে হরমোনের ক্ষরণ স্বাভাবিক ভাবেই বেশি থাকে। তার সাথে আমরা খালি পেটে ঘুম থেকে উঠে আরো ৩-৪ কাপ কফি খেয়ে নেই। যার ফলে আমাদের শরীর চনবণে হওয়ার পরিবর্তে মানসিক চাপ, অবসাদ, এক ঘেয়েমি আরো বেড়ে যায়।
তাই খালি পেটে না খেয়ে সামান্য ব্রেকফাস্ট করে তার পরে আমরা কফি খেতে পারি। কিংবা দুপুরে ভাত খাওয়ার পর ১-২ কাপ কফি খাওয়া যেতেই পারে। তাতে কফিতে থাকা ক্যাফিন যেমন আমাদের শরীরে ভালো ফল দেবে তেমনি হরমোন ক্ষরণের মাত্রাও স্বাভাবিক থাকবে। তবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কফি খাবেন না, এতে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। কফির ক্যাফিন এর উত্তেজক উপাদান আমাদের শরীরের অনেকক্ষণ স্টে করে। যার ফলে গভীর ঘুমে আমরা আচ্ছন্ন হতে পারিনা। অনেক ক্ষেত্রে ঘুম আসতে অনেক দেরি হয়। ফলে সঠিক সময়ে কফি পান করুন। কফি যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী, তেমনি সঠিক নিয়ম মেনে না খেলে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে।
Discussion about this post