বাংলাদেশের সেনার সদস্যদের উদ্দেশ্যে সেনাপ্রধানের ভয়ঙ্কর বার্তা। তার আগে ই সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদুতের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকের আলোচনায় উঠে এসেছে করিডর ইস্যুর প্রসঙ্গ। তবে এবার কি মানবিক করিডোর প্রদান সম্পর্কে কোন ভয়ঙ্কর বার্তা দিতে চলেছেন সেনাপ্রধান।
সেনাবাহিনীও সেনা প্রধানকে নিয়ে যখন জল্পনা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে তখন সামনে আসছে সেনা প্রধানের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠক। এ বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর এমনকি বাংলাদেশ রাখাইনদের উদ্দেশ্যে যে মানবিক করিডোর প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই ইস্যু টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এবং এই বৈঠকের পর যখন সেনাপ্রধানের সঙ্গে সেনা সদস্যদের বৈঠক এবং তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণের ইঙ্গিত প্রকাশ্যে আসলো তখন স্বাভাবিকভাবেই সেনা সদস্যদের সঙ্গে সেনাপ্রধান এই করিডোর সম্পর্কিত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে কিনা সেই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
বেশ কিছুদিন আগে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে যখন রাখাইন প্রদেশে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল তখন এই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল যে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ও তার উপদেষ্টা মহল সেনাপ্রধানের থেকে কোনরকম অনুমতি বা পরামর্শ না নিয়েই করিডোর প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যার ফলে এখন এই মানবিক করিডরের বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত তৎপরতা দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে। সেনাপ্রধান তিনি সেনা সদস্যদের নিজের বার্তা মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমান অবস্থান ঠিক কী। কোন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ্জামানের নেতৃত্বে সকল সেনা সদস্যরা সেটাও স্পষ্টভাবে সামনে আনার চেষ্টা করবেন সেনাবাহিনীর প্রধান।
ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের এই মানবিক করিডোর প্রদানের পুরো বিষয়টিতে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমনকি শেষমেষ এনসিপির নেতৃত্বরাও এই মানবিক করিডরের বিপক্ষে অবস্থান করছে। দেশটির প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি তারাও কার্যত সমর্থন প্রদান করেননি। আর আওয়ামী লীগ দলটি আপাতত দেশে নিষিদ্ধ হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতৃত্বের তরফ থেকে যে সমস্ত প্রতিক্রিয়া গুলি আছে তার থেকেও ধারণা তৈরি করা যাচ্ছে যে কোন দলই এই সিদ্ধান্তে সমর্থন পোষণ করতে ইচ্ছুক।
উল্লেখ্য সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে একটি “মানবিক করিডোর”-এর গুরুত্ব সম্পর্কে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে বোঝানোর শেষ চেষ্টা করার জন্য আমেরিকান চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের নেতৃত্বে ঢাকা-ভিত্তিক তিনজন মার্কিন কূটনীতিক বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে দেখা করেছেন ।
জানা গেছে যে এই বৈঠকের সময়, ইউনূস, খলিলুর রহমান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান আমেরিকান চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সের সুদক্ষতা ব্যবহার করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন যাতে তিনি জেনারেল জামানকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রসদ সরবরাহ এবং সরবরাহের জন্য “মানবিক করিডোরের” প্রয়োজনীয়তার কাছে আত্মসমর্পণ করতে রাজি করাতে পারেন।
যদিও তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি যে জেনারেল জামান মার্কিন কূটনীতিকদের দল, যাদের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সিলর এরিক গিলান এবং প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাইকেল ডিমিচিই তাদের যুক্তিতে বিশ্বাসী কিনা। তবে বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে যে সেনাপ্রধান তার মূল অবস্থান থেকে সরেননি।
আবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেতরে থাকা বিরোধী গোষ্ঠীর জন্য, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিদ্যমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি হলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে গোপনে মিয়ানমারে আরাকান আর্মি এবং অন্যান্য পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র যে ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে চাইছে এটি তারই ফল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতি চীন, রাশিয়া এবং ভারতের উপর ছায়া ফেলতে পারে, যাদের প্রত্যেকেরই রাখাইন রাজ্যে অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে – যারা একটি ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়তে পারে যা বাংলাদেশকে এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে পারে।
Discussion about this post