ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা প্রবণ পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারত নিরাপত্তার কারণে চট্টগ্রামের ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে। তার কারণ ভারতের উপ দ্রুতাবাসে হামলার ঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। ওসমান হাদির মৃত্যর ঘটনার পর বাংলাদেশ ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত তীব্র অবস্থান ব্যক্ত করেছিল। এইবার ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে। ঢাকা পাল্টা পদক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ দুই দেশের মধ্যে যে স্থিতিশীলতা নেই, সেটা পরিষ্কার। এই উত্তেজনা পরিস্থিতির মধ্যে এইবার মুখ খুলল রাশিয়া। রাশিয়া বলছে, নয়াদিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে উত্তেজনা কমাতে হবে। তবে কি এইবার কড়া অ্যাকশনে জব্দ হবেন ইউনূস?
নয়া দিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে যে পরিস্থিতি, তাতে অনেকেই শঙ্কায় রয়েছে। কারণ এমন অবস্থায় সবার প্রথমে বিপদে পরে দেশবাসী, দেশের নাগরিক। এরমধ্যে রাশিয়ার বক্তব্য এল। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া। বিষয়টি শুধু দুই দেশের মধ্যে নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যত দ্রুত সম্ভব দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো প্রয়োজন। এমনই বার্তা দিয়েছেন ঢাকায় রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খোজিন।
জানা যায়, সোমবার রুশ দূতাবাসে সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় বলেন রুশ রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, এটি একটি ভূ রাজনৈতিক বিষয়। ওই অঞ্চলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যদি ফলপ্রসূ সমাধান না আসে। জানা গিয়েছে, দূতাবাসের অন্য কূটনীতিকরা সেই সময় উপস্থিত ছিলেন।
খোজিন আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই উত্তেজনা নিরসন করা প্রয়োজন। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, পারস্পরিক আস্থা এবং বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হওয়া উচিত। একইসঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিকে আর বাড়তে না দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন।
অনেকেই বলছেন, আসলে রুশ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে ইঙ্গিত করেই বলেছেন। এমনকি রাশিয়া এটা স্পষ্ট করে দেয়, দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে রাশিয়া কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নির্বাচন তফশীলকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। রাশিয়া আশা করছে, আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে খোজিন বলেন, রাশিয়া এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য তারা এখন আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ যদি এক্ষেত্রে আমন্ত্রণ জানায়, তবে রাশিয়া পর্যবেক্ষক পাঠাবে। বাংলাদেশের মাটিতে বসে যখন রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হবে, উত্তেজনা কমাতে হবে, তখন এটা পরোক্ষভাবে বাংলাদেশ সরকারকেই বলা কিনা, সেটা একটা বড় বিষয়। অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, সেটা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি একটা নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের কাছে। ফলে অন্তবর্তী সরকারের খুব তাড়াতাড়ি দেশের পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া উচিত। কিন্তু কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরোক্ষভাবে সরকারের অন্দর থেকেই মদত আসছে। এমনকি সরকারের বলা ভালো মুহাম্মদ ইউনূসের অত্যন্ত স্নেহধন্য রাজনৈতিক দল এনসিপির নেতারা যে হমকি বা বিতর্কিত বক্তব্য রাখছেন, তাতে সরকার বা প্রশাসন নিরসন করার চেষ্টাই করছে না। ফলে সবমিলিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠছে। অনেকেই ভাবছেন, নয়া দিল্লি কেন কোনও কড়া পদক্ষেপ করছে না। কিন্তু নয়া দিল্লি যে বসে নেই, সেটা ছোট ছোট পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট। দিল্লি কড়া নজরে রেখেছে বাংলাদেশকে। কিন্তু বড় কোনও পদক্ষেপ করলে অন্তবর্তী সরকারের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ হয়ত বিপদে পড়বে। ভারত বারবার বার্তা দিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভারত দায়বদ্ধ। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভারত সবসময় কাজ করবে। তাই এখনও কড়া অ্যাকশনে যায়নি নয়া দিল্লি। তবে রাশিয়া থেকে যে বার্তা এল, এরপর কি করে বাংলাদেশ, এখন সেটাই দেখার।












Discussion about this post