যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড খবরের শিরোনামে, নির্বাচন নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন…তখন চুপ রয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। শেষমেষ তিনি সামনে এলেন। চট্টগ্রামে নেভাল একাডেমিতে বক্তব্য রাখেন তিনি। তিনি সতর্ক থাকার কথা বলেন। তৈরি হতে বলেন বাহিনীকে। আর সেই বক্তব্যকে ঘিরেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নানা তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা করছেন। তবে কি বাংলাদেশ সেনা শাসনের দিকে যাচ্ছে? সেই কারণেই কি ইউনূসের বিরুদ্ধে ওয়াকার তৈরি থাকার কথা বললেন? উঠে আসছে প্রশ্ন।
জানা যাচ্ছে, রবিবার চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। সূত্রের খবর, নৌবাহিনীর ৫২ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন পেয়েছেন। আর সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানকে। তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন। আর সেখানেই বক্তব্য রাখেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের সব সময় তৈরি থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি নৌ বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিতে প্রশংসা করেছেন জেনারেল ওয়াকার। যত দিন এগোচ্ছে, বাংলাদেশের নৌ বাহিনী হয়ে উঠছে প্রযুক্তি নির্ভর। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ সামলাতে প্রস্তুত নৌবাহিনী। তারা আধুনিক হয়ে উঠছে। অপরাধ দমনে প্রশংসনীয় কাজ করছে তারা। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য উৎসাহ দিলেন নৌ বাহিনীকে? কোনওভাবে কি সেনা শাসনের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ? কারণ বাংলাদেশের অন্দরে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা তৈরি হয়েছে, যে সামরিক শাসন জারি হতে পারে বাংলদেশে। কারণ পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটে আইন শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে। অনেকে আবার বলে থাকেন, প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস দেশ চালাতে ব্যর্থ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বাংলাদেশে এই মূহুর্তে নির্বাচন নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে। যদিও সব ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে সরকারের তরফে। এদিকে এর আগে দেশের ভিতর কখনও ডিসেম্বর, কখনও জুন আবার কখনও এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। সেনাপ্রধান বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হোক। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার যত তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে নিয়ে আসা যায়, সেটার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার। কিন্তু সেই কথাও রাখেনি অন্তর্বর্তী সরকার। অনেকে বলছে, তাড়াতাড়ি নির্বাচন চেয়েছিল দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। তারাও ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চেয়ে। কিন্তু তাদের সঙ্গে সরকার সমঝোতায় এসে ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ঘোষণা করে। ফলে যতদিন নির্বাচন আটকে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় থাকা যায়, তারই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মহম্মদ ইউনূস। কিন্তু ওয়াকার সেটা মানতে নারাজ। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এদিকে দেশে হাল ফিরছে না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সেনানিবাস ছেড়ে দেশের ভিতর পাহারা দিচ্ছে সেনাবাহিনী। আর সেই কারণেই বারে বারে সামরিক শাস9নির কথা উঠে আসছে। এমনকি বাংলাদেশের জনগণ সরকারের থেকেও সব থেকে বেশি ভরসা করে সেনাবাহিনীকে। তারমধ্যে নৌ বাহিনীর নিয়ে ওয়াকারের এমন বক্তব্য। তবে কি আকার ইঙ্গিতে প্রস্তুতি থাকার কথা বললেন তিনি? এখন দেখার, শেষমেষ বাংলাদেশের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়ায়।
Discussion about this post