আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন। তারপরে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়া অন্তর্বর্তী সরকার। সিদ্ধান্তর মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত ছিল আগে দেশের ইলিশের চাহিদা মেটানো হবে তারপর বাণিজ্যিক বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে। শুধু তাই নয় পুজোর আগে বাংলাদেশের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল দুর্গাপুজোর আগে ইলিশ পাবেনা ভারত।
বিগত বছরে হাসিনা সরকার থাকাকালীন পুজোর আগে উপহার হিসেবে ওপার বাংলা থেকে এপারে ইলিশ পাঠানো হতো। এবারে ইলিশ আসলেও সেটা উপহার নয়। এই বিষয়ে বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত, ভারতে ইলিশ যাবে তবে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই সংকটে। আন্তর্জাতিক ঋণের বোঝা মাথার উপর। আর হয়তো সেই দিকেই নজর রেখে ভারতের সাথে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের। সোমবার সংবাদ মাধ্যমকে বাংলাদেশের বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এই ইলিশ উপহার হিসেবে যাচ্ছে না ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে। রপ্তানির টাকা বাংলাদেশ সরকার পাবে। সেটা খুব ছোট করে দেখার মত টাকা নয়। যারা এই ইলিশ চাইছেন তাদের অনেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন। তবে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এখনো যায়নি। শুধু একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আগেই তো দাম বেড়ে গিয়েছে।আজ এই রপ্তানি হলে দাম বাড়বে এ কথা ঠিক না। আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, প্রতিবেশীর সঙ্গে অনেক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। সেই আলোচনার ধারাটা ছোট ছোট বিষয় বন্ধ হয়ে যাক, সেটা আমরা চাই না।”
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে খবর দূর্গা পূজা উপলক্ষে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করা হবে। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান একটি নোটিশ জারি করে এর বিরোধিতায়। এই নোটিসের জবাবদিহি করতে হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সহ আমদানি রপ্তানি কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান কে।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ এর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ডঃ সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন। চাঁদপুর ঘাটের একদিনের ইলিশের পরিমাণ এই তিন হাজার টনের থেকে অনেক বেশি। এমনিতে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার ম্যাটট্রিক টন ইলিশ হয়। সেখানে সামান্য তিন হাজার টন ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক বজায় রাখতে রপ্তানি করাই যায়। রপ্তানি না করা হলেও গোপনে অনৈতিকভাবে চালান করা হয় ইলিশ। তাই সুসম্পর্ক গড়ে রাখতে এবং নিজেদের টলমল আর্থিক অবস্থা স্থায়ী করতে বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ।
Discussion about this post