একটা গুলি।
একটা অপমৃত্যু।
বদলে গেল বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির অভিমুখ। গুলি করা হয়েছে পদ্মাপারের এক ‘বিতর্কিত’ এবং প্রতিবাদী এক নেতাকে। তাঁর নাম কী, তা আর নতুন করে বলার দরকার পড়ে না। যেদিন তাঁকে গুলি করা হয়েছিল, সেদিনই এই দুনিয়া জেনে যায় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের অধিকারী এই তরুণ তুর্কির নাম কি। মগনলাল মেঘরাজের কথার সূত্র ধরে বলতে হয় নাম না বলে বদনামও বলা যেতে পারে।
এই বদনামের জন্য দায়ী তিনিই। কারণ, যে দেশের চাল খেয়ে তাদের বেঁচে থাকা, সে ভারতের সঙ্গে সে বেইমানি করেছে। তবে জঙ্গিদের মতো নয়। জঙ্গিরা যেভাবে নাশকতা চালিয়ে ভারতকে অস্থিতিশীল করার একটা চেষ্টা করে, বাংলাদেশের এই প্রতিবাদী নেতা কিন্তু সেভাবে কোনও নাশকতা করেনি। এমনকী নাশকতার কোনও পরিকল্পনাও করেনি। কিন্তু সে লাগাতার ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে এসেছে। বলা হচ্ছে, তাঁর অপমৃত্যুর জন্য দায়ী ভারত। কিন্তু সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। অথচ একটি প্রতিবেদন বলছে, হাদি-হত্যার নীল নকশা তৈরি হয়েছিল পদ্মাপারে। এই শুটিংয়ে একা ফয়সাল নয়, টাকার লোভ সামলাতে পারেনি ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবীর, মা, তাঁর স্ত্রী সাহিদা পারভিন সামিয়া। এই প্রজেক্টে তারা তাদের পারিবারিক ব্যবসায় রূপান্তরিত করে। তদন্ত যত গভীর হচ্ছে, ততই বেরিয়ে আসছে ভয়ংকর সব তথ্য।
রাজপথে পরিচিত হওয়ার আগে হাদির পরিচয় ছিল তিনি একজন প্রতিবাদী কবি। ‘সীমান্ত শরিফ’ ছদ্মনামে লিখেছেন একাধিক প্রতিবাদী কবিতার বই। বলা যেতে পারে, তাঁর প্রতিবাদ প্রতিরোধের যাত্রা শুরু হয়েছিল কবিতার হাত ধরে। গত জুলাই আন্দোলনের পর সেই যাত্রা মোড নেয় রাজপথে। তখনই মানুষ তাঁকে একজন প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে চিনতে শুরু করে। একজন প্রতিবাদী হাদি। গত জুলাই আন্দোলের পর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্যে হাদির নেতৃত্বে গঠিত হয় সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ। এই মঞ্চ থেকেই জুলাই ভারত বিরোধী বক্তব্য, জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণ।
দক্ষিণ জেলার ঝালকাঠি নলছিটি থেকে উঠে আসা হাদিকে দীর্ঘদিন কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা যায়নি। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিবারের সন্তান। নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় শিক্ষকতাও করেন। ইতিহাস সাক্ষী। যখন এই বদ্বীপের মানচিত্র রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে তখনই কোনও না কোনও অসম সাহসী তরুণ নিজের রক্ত দিয়ে লিখেছেন মুক্তির মহাকাব্য। শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’-এর দাবিতে শাহবাগে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এইসব কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগ দিয়ে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে এই প্ল্যাটফর্মের অধিকাংশ সদস্য নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিলেও হাদি সেখানে যাননি। বরং তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেন।
কেন এই আক্রমণ? বলা হচ্ছে, এই আক্রমণের উদ্দেশ্যে যদি ভারত-বিরোধী একটা কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করা হয়ে থাকে, তাহলে দ্বিতীয় উদ্দেশ্যটি হল বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করা। তাই, ভোটের আহবে হাদিকে কে বা কারা খুন করে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি আগামীদিনে কোন খাতে বইবে, তা দেখার জন্য আমাদের অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকতে হবে।
বাংলাদেশে সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছৌঁয়া, শুধু সস্তা হল লাশ। তৌহিদি জনগনকে খুশি করতে হলে শুধু টাকা পয়সা এবং...
Read more












Discussion about this post