নৈরাজ্যের বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই চরম অরাজকতার সাক্ষী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, খুলনা থেকে রাজশাহী। জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছাত্রনেতা তথা ইনকিলাব মঞ্চের প্রধান ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে কার্যত জ্বলছে বাংলাদেশ। এই ওসমান হাদি ছিল এক চরম ভারত বিদ্বেষী এবং উগ্রবাদী যুব নেতা। ফলে তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়া এবং মৃত্যুর পর ভারত বিরোধী একটা জিগির তুলে দেওয়া হয়। তাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। নৃশংস হিংসায় প্রাণ হারায় দিপু চন্দ্র দাস নামে এক নিরীহ হিন্দু যুবক। পাশাপাশি এক বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় জীবন্ত পুড়ে মারা যায় তাঁর সাত বছরের কন্যা। আরও বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। সবমিলিয়ে জ্বলছে ভারতের পড়শি দেশ। তবে মূল টার্গেট ভারতবর্ষ। কেন এমনটা হল? সামান্য এক ছাত্রনেতার মৃত্যুতে আচমকা গোটা দেশের মানুষ ভারত-বিরোধী হয়ে উঠলেন কিভাবে? আর সেটাই ভাবিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
প্রথমেই যে প্রশ্নগুলো ভারতীয় গোয়েন্দাদের ভাবিয়েছে তা হল, পাকিস্তান কি আবার বাংলাদেশকে সংযুক্ত করতে চলেছে? নাকি বাংলাদেশই চাইছে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ফ্রন্ট হয়ে উঠতে? শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসা থেকে মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাঁর অন্তর্বর্তী সরকার সচেতনভাবে ভারতের থেকে দুরত্ব তৈরি করেছে, সেই সঙ্গে দুরত্ব কমিয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে। যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভারতের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিলেন যে মুক্তিযোদ্ধারা। ক্ষমতায় এসেই সেই মুক্তিযোদ্ধাদের হেনস্থা করা শুরু করে ইউনূস বাহিনী। যে জামাত মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে পিছন থেকে ছুড়ি মেরেছিল, ইউনূস ক্ষমতায় এসেই সেই জামাতকে সামনের সারিতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই শুরু হয় এক ভয়ানক খেলা। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারাও। কারণ ইউনূস সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকেই বাংলাদেশে পাকিস্তানের আইএসআই-এর উপস্থিতি বাড়ছিল। এমনকি প্রকাশ্যে পাকিস্তানের সেনাকর্তাদের আসা-যাওয়া বেড়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশের এক শ্রেণির সেনাকর্তাও পাকিস্তানে যাতায়াত শুরু করে। একের পর এক পাকিস্তানি জেনারেল ঢাকায় এসেছেন। পাকিস্তানের মন্ত্রী পর্যায়ের অনেকেই ঢাকায় এসেছেন। বেশ একটা মাখোমাথো ব্যাপার। এরমধ্যেই ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, খোদ ঢাকায় একটি হাই সিকিউরিটি জোনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের একটি কার্যালয় খোলার অনুমতি দিয়েছে ইউনূসের প্রশাসন। সেটা হল আইএসআইয়ের ঢাকা সেল। এরপর বাংলাদেশে একের পর এক ঘটনা। তবে ওসমান হাদির মৃত্যুর পর যে ভাবে ভারত-বিরোধী জিগির উঠতে শুরু করেছে তাতে স্পষ্ট এটা আইএসআইয়ের একটা বড় চাল।
গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের জামাত-ই-ইসলামী নামে কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠনকে কলের পুতুল বানিয়ে এই খেলা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সম্প্রতি এমন মত প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত বীণা সিক্রি। যিনি দীর্ঘসময় বাংলাদেশেও রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি বলেছেন, মৌলবাদী ইসলামি রাজনৈতিক দল জামাত-ই-ইসলামি বাংলাদেশে সক্রিয় কাজ করলেও তাদের শক্তির নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তান। কূটনৈতিক মহলের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের পরিকল্পনা ছিল, ফের আগের মতো বাংলাদেশের উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে। আর সেই সুযোগটা তাঁদের হাতে তুলে দেয় মার্কিন ডিপ স্টেট। তাঁরা এখন অনেকাংশেই সফল। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন জেনারেল, সেনাকর্তা ও আইএসআই অফিসাররা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর উপর প্রভাব খাটাচ্ছেন। বাংলাদেশ সেনার মধ্যে একটা বড় বিভাজন রয়েছে। একদল মুক্তিযুদ্ধের অনুসারী অন্যদল জামাতপন্থী। এই জামাতপন্থীদের মাধ্যমেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কার্যত কবজা করে নিয়েছে পাকিস্তান। অন্যদিকে মুহাম্মদ ইউনূসকে কবজা করে রেখেছে জামায়তে ইসলামী। ফলে এখন ইসলামাবাদ থুড়ি রাওয়ালপিন্ডি যা বলছে, ঢাকা তাইই করছে।
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর এখনও জ্বলছে বাংলাদেশ। তাঁর খুনি এখনও ধরা পড়েনি। কিন্তু ভারতকে দোষারোপের পালা অব্যাহত। ভারতের দূতাবাসে হামলা পর্যন্ত হয়েছে খুলনা ও রাজশাহীতে। ঢাকাতেও চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেনাবাহিনীর বাঁধায় তা হয়নি। ভারতের রাষ্ট্রদূতকে পরপর দুবার তলব করেছে ঢাকা। ভাবখানা এমন, যেন ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলা হচ্ছে। এর নেপথ্যে কোন শক্তি কাজ করছে তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয়নি ভারতের। এরমধ্যেই ওসমান হাদির মৃত্যুর নেপথ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকারেরই হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে সোচ্চার হলেন হাদির দাদা শরিফ ওমর বিন হাদি। অর্থাৎ, বাংলাদেশে এই ভারত-বিরোধী জিগির তোলা যে নিছকই একটা পরিকল্পনার অঙ্গ ছিল, তা স্পষ্ট। ভারত এই বিচ্ছিন্নতাবাদ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না। সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়া দিল্লি। এখন দেখার ভারত কোনও বড় পদক্ষেপ নেয় কিনা।
বাংলাদেশে সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছৌঁয়া, শুধু সস্তা হল লাশ। তৌহিদি জনগনকে খুশি করতে হলে শুধু টাকা পয়সা এবং...
Read more












Discussion about this post