বাংলাদেশে ছাত্রনেতারা গঠন করেছে নতুন একটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি। দল গঠনের কিছুদিনের মধ্যে এই দলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে এসেছে। বাড়ছে বিতর্ক। জানা যাচ্ছে, গত আট মাসে প্রায় ২২টি রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে বাংলাদেশে। দলগুলির কার্যকলাপ দেখে প্রশ্ন উঠে আসছে, দলগুলি কি পুরনো রাজনৈতিক দলগুলির দেখানো পথে হাঁটছে? আসলে দলগুলির উদ্দেশ্য কি? এই বিষয়ে কি ভাবছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা, চলুন আলোচনা করা যাক।
বাংলাদেশে প্রবলভাবে চর্চিত হচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। সদ্য আত্মপ্রকাশ হওয়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে ঘিরে নানা বিতর্ক দানা বাঁধছে। এর পিছনে নানা অভিযোগ থাকলেও কোনও কোনও ক্ষেত্রে দলের নেতার মন্তব্য ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, মৌলিকভাবে অঙ্গীকার করা পরিবর্তনকারী দলটি প্রচলিত রাজনীতির নিয়মাবলীর ধারক, বাহক হয়ে উঠছে? আসলে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি ফেব্রুয়ারির শেষে আত্মপ্রকাশ ঘটে। তখন তারা ঘোষণা করেছিল, রাজনীতিতে গুণগত মান বৃদ্ধি এবং তারুণ্য নির্ভর এই দলটি বাংলাদেশের জনগণের ভরসার জায়গা হয়ে উঠবে। তবে এই দল গঠন হওয়ার পর শীর্ষ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে আসে। সারজিস আলম, যিনি দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক নিজের এলাকাতে গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন বিষয়টিকে ঘিরে প্রবল শোরগোল তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, দলের একাধিক নেতাদের বিরুদ্ধে উঠে আসছে দুর্নীতির অভিযোগ। এখানেই প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, যেভাবে বিতর্ক দানা বাঁধছে সেখানে গুনগত রাজনৈতিক পরিবরিবর্তের বদলে একাধিক অভিযোগ কেন উঠছে? তবে এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, একটি দল ভালো করে চালানোর জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞতা বা পরিপক্বতা। থাকা প্রয়োজন কৌশল। যেটা ছাত্রনেতাদের মধ্যে নেই।
আসলে আলোচনাতে উঠে আসছে, দলের দুই শীর্ষ নেতা সারজিস আলম, যিনি উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক এবং হাসনাত আবদুল্লাহ, যিনি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক।২০২৪ এর অগাস্ট মাসে বাংলাদেশের গণ অভ্যুত্থানে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। তারা গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়কও। তার মধ্যে সারজিস আলম নিজের এলাকায় গাড়িবহর করে শোডাউন দিতেই সমালোচনার মুখে পড়েন। এরমধ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম দুদুকে যান। কেন তারা সেখানে গেলেন প্রশ্ন উঠে। তারা জানায়, ব্যক্তিগত কারণে দুর্নীতি দমন শাখায় তারা যান। শুরু হয় বিতর্ক। এছাড়াও হাসনাত আব্দুল্লাহ বেশ কিছুদিন আগে, সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তাতেও সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাঁধে। সব মিলিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড ঘিরে বাংলাদেশের অন্দরে চলছে জলঘোলা। গত কয়েক মাস ধরে বিশেষত এই দুই নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকে অস্বস্তিতে পড়েন বলে জানা গিয়েছে।
শুধুমাত্র তারাই নন, কিছুদিন আগে
পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে। যা ঘিরে প্রবল হইচই হয় বাংলাদেশে। অর্থাৎ দলটি শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত বিতর্ক তৈরি হওয়ার কারণ হিসাবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ যুক্তি খাড়া করছেন, অনভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বাইরে থেকে প্রভাব। যদি তারাও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করে, তবে বলাই যায়, সেই পুরনো পথেই হাঁটছে তারা। এখন দেখার, এই সবের পর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে কোনও রকম পদক্ষেপ করা হয় কিনা!
Discussion about this post