ইতিমধ্যেই রাশিয়ার তিনটি জাহাজ বাংলাদেশের চট্টগ্রামে এসে ভিড়েছে। হঠাৎ রাশিয়ার জাহাজ কেন বাংলাদেশে? উঠছে প্রশ্ন। অ নেক বলেছিলেন, এর পিছনে ভারতের একটি অদৃশ্য ভূমিকা রয়েছে। শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বরং গোটা বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে ভারত প্রথম পাঁচ নম্বর স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক। এদিকে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক করেছে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সীমান্ত ঘেষে এতবড় একটি মিলিটারি একটিভিটি ঘটবে আর ভারত অন্ধকারে থাকবে, এটা হতে পারে না। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চুপ করে বসে নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে একটি কৌশল কষে ফেলেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চকে তাদের প্রভাবকে আরও সম্প্রসারিত করা। কিন্তু এত পরিকল্পনার পরও এখনো পর্যন্ত ভারতের আশেপাশে স্থায়ী কোনও মিলিটারি বেশ তৈরি করতে পারেনি। কারণ ভারত যে কোন মুহূর্তেই পরিকল্পনাকে ব্যালেন্স করে দিত। আসলে ভারত চাইছে না, আঞ্চলিকভাবে আমেরিকার প্রভাব বিস্তার হোক। যখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন তখন আমেরিকার তরফে একটি চাপ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দেন। এটা শুধুমাত্র রাজনৈতিক কোনো কারণ নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পিছনে ছিল ব্লুপ্রিন্ট। খবর রয়েছে, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের একটি অংশ জুড়ে নতুন একটি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আমেরিকা সেখানে একটি শক্ত ঘাঁটি বাধ্য। একই সঙ্গে ভারত চীন মায়ানমারের উপর নজর রাখত। এর মধ্যে বাংলাদেশের রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে একটা নতুন দিক উন্মোচন হতে চলেছে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কিছুদিন আগেই চীনে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বিতর্কিত মন্তব্য করে এসেছেন। শুধু তাই নয়, ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে বেশি কিছু বিতর্ক মন্তব্য করেছেন যেটা ভালো চোখে দেখেননি ধরো। এমনকি ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং অজিত দোভাল এর কড়া মন্তব্য করেছেন। শুধু তাই নয় চিনে গিয়ে এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন মোহাম্মদ ইউনুস, যেটা ভারতের নিরাপত্তার দিক থেকে বিপদজনক হতে পারে। যদিও ভারত থেকে স্পষ্টবার্তা দিয়ে দেওয়া হয়েছে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে মোহাম্মাদ ইউনুস এবং নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে। বাংলাদেশের এইসব পরিকল্পনা মাঝে ভারতও পালটা পরিকল্পনা শুরু করল। যদি বাংলাদেশ যায় সামরিক শক্তি বাড়াতে, ফাইটার জেট এবং শক্তিশালী কোনও অস্ত্র আনতে, তবে তার জন্য এতদিন ধরে চীন থেকে তারা নিয়ে এসেছে, এই ধারা পরিবর্তন করুক বাংলাদেশ। এর পরিবর্তে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনা হোক। এর মাঝে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের ইচ্ছেও জড়িয়ে থাকতে পারে। কারন তিনিও চান না বাংলাদেশ চীনের উপর ভরসা করুক পুরোপুরিভাবে। না হলে বাংলাদেশের পরিস্থিতির শ্রীলংকার মত হতে পারে। তাই তারা চাইছে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে। তবে এর পিছনে ভারতের কৌশলগত আগ্রহ স্পষ্ট।
অন্যদিকে মায়ানমারে আমেরিকা একটি সামরিক মিশন চালাতে চাইছে। যাতে ওই অঞ্চলটিতে একটি স্থিতিশীলতা আনা যায়। আর সেই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে অংশীদার হিসাবে টানা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে হতেই পারে, চট্টগ্রাম এলাকায় আমেরিকা একটি গোপন ঘাঁটি তৈরি করলো। অথবা সুদূর ভবিষ্যতে সেখান থেকে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। পরিকল্পনা রুখতেই নাকি রাশিয়া ঢুকেছে। আসলে চীন এবং আমেরিকা এক অপরকে টেক্কা দিতে এশিয়ার এই অংশ ঢুকে পড়ছে, সেখানে রাশিয়া চুপ করে থাকবে না। আর এটা ভারত বুঝে গিয়েছিল অনেক আগেই। S400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, এবং বিভিন্ন মিলিটারি ট্যাঙ্ক শিলিগুড়ি করিডোরে মোতায়েন করতে শুরু করে দেয়। আর তাই মনে করা হচ্ছে, কোনও শক্তির হাতে চলে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে রাশিয়াকে ব্যবহার করছে ভারত। যেখানে বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এটা একটি ধারণা করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। এখন দেখার, শেষমেশ কি পরিস্থিতি হয়।
Discussion about this post