লোকসভা ভোটে পরাজয়ের পরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধারা অব্যাহত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরে বিভিন্ন জায়গায় হকার উচ্ছেদে ও বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে বুলডোজারও চলেছে। তারই মধ্যে হকার উচ্ছেদ নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন অধীর। শুক্রবার দুপুরে বহরমপুর কংগ্রেস কার্যালয়ে অধীর বলেন, রাজ্য পুলিশের লাঠি গুঁতো খেয়ে কোনও হকার জীবন যাপন করতে চায় না। কিন্তু বাধ্য হয়ে তাঁরা রাস্তায় হকারি করে সংসার চালায়। অথচ তাঁদের উচ্ছেদ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। হকাররা তৃণমূলের মিছিলে যায়। তাদের পুনর্বাসন না দিয়ে কী করে উচ্ছেদ করেন। কত হকার রয়েছে তার হিসেব রাখে না রাজ্য সরকার বলেও দাবি করেন অধীর। উল্লেখ্য, সোমবার নবান্নের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পর জেলায় জেলায় জোরকদমে চলছে ফুটপাথ সাফাই অভিযান।
রাস্তার ধারে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে চলছে বুলডোজারও। এদিকে এই গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন এবং দলীয় নেতা ও কাউন্সিলরদের ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ সাতটি কর্পোরেশনের মেয়র, পুরসভার চেয়ারম্যান, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের বৈঠকে বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের পর থেকেই একের পর এক প্রশাসনিক বৈঠক করে পুলিশ এবং আমলাদের কড়া বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপনির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র বা মহকুমায় আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হয়েছে। এই আবহে সরকারি প্রকল্পের কাজ আটকে আছে বহু জায়গায়। এই নিয়ে নবান্নের বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। এর জবাবে নাকি মুখ্যসচিব নির্বাচন কমিশনের বিধির উল্লেখ করেছিলেন।
এরপরই নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তাহলে চাইলে নির্বাচন কমিশনেরই চাকরি করতে পারেন।’ মমতার প্রশ্ন, যেখানে ভোট সেখানে ছাড়া রাজ্যের বাকি জায়গায় কেন কাজ আটকে আছে? মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘গ্র্যান্ডে অনেক ফিল্মস্টাররা যায়, হাইপ্রোফাইল লোকেরা যায়। সেখানে এত হকার অ্যালাও করলে মুশকিল, যদি কোনও ঘটনা ঘটে! সিকিউরিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। হয়তো অন্য কেউ ঘটিয়ে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবে। সেই সুযোগ কেন দেব? তখন তো চাল, চুলো দুটোই যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি হকারদের বসার জায়গা দেব। কিন্তু কেউ যদি বলে গ্র্যান্ডের পাশেই বসব, তা হবে না। আজ থেকে সার্ভে শুরু হবে হাতিবাগান, গ্র্যান্ডের সামনে, নিউমার্কেটের সামনে, কর্পোরেশনের সামনে। অফিসারদের বলছি, দেখুন কীভাবে সর্টআউট করা যায়, সিস্টেমেটিক করা যায়। আমি বুলডোজার হাতে নিয়ে যেতে বলছি না। ববি, মলয়, অরূপ, অতীন, দেবাকে বলছি এটা দেখতে।’ মমতার সংযোজন, ‘অন্য জায়গায় বসতে হবে দরকার হলে। লোকে সব বাজারেই যায়। আমরা দরকারে বড় বিল্ডিং করে দেব। রাস্তার হকারদের একতরফা দোষ না দিয়ে, কিছু বিল্ডিং তো আমরা করতে পারি।’
Discussion about this post