আর জি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তভার হাতে পেয়েছে সিবিআই। আবার আর জি কর হাসপাতালে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তও সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। খুন এবং ধর্ষণ মামলায় কলকাতা পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছিল, কিন্তু এখনও এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকার প্রমান সিবিআই পায়নি বলেই জানা যাচ্ছে। অপরদিকে, দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআই গ্রেফতার করেছে আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দুটি মামলার ক্ষেত্রেই একাধিক ব্যক্তিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আর জি কর হাসপাতালের কর্মী থেকে আধিকারিকরা যেমন আছেন তালিকায়, তেমনই কলকাতা পুলিশের বহু কর্মী এবং আধিকারিক রয়েছেন সেই তালিকায়। বিশেষ করে টালা থানার তদন্তকারী আধিকারিক এবং ওসি। জানা যাচ্ছে, তদন্তের স্বার্থে একাধিকবার সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। কিন্তু এর মধ্যেই আচমকা বুকে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল শহরের চারটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেছেন, এবং শেষ পর্যন্ত পঞ্চম হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছেন। তাঁর জায়গায় অর্থাৎ টালা থানার দায়িত্বে ইতিমধ্যেই অন্য এক আধিকারিককে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। লালবাজার সূত্রে খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে শ্যামপুকুর থানার অতিরিক্ত ওসি মলয় দত্তকে টালা থানায় পাঠানো হয়েছে। তিনি অভিজিৎ মণ্ডলের জায়গায় আপাতত দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু কী এমন হল টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের? কেনই বা তাঁকে একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিল?
আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় এমনিতেই আতস কাঁচের নীচে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা। বিশেষ করে টালা থানার ভূমিকা নিয়ে উঠছে বিবিধ প্রশ্ন। কারণ, আর জি কর হাসপাতাল টালা থানার অধীনেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে টালা থানার তদন্তকারী অফিসার এবং ওসিকে বারবার তলব করছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে আচমকা বুকে ব্যাথা অনুভব করেন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। একাখিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী. তাঁর বুকে ব্যাথার পাশাপাশি রক্তচাপও বেড়ে গিয়েছিল। তিনি বারবার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলার ফলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু জানা যাচ্ছে, শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল তাঁকে ভর্তি নিতে চায়নি। প্রতিটি হাসপাতালই জানিয়ে দেয়, তাঁর শারীরিক অবস্থা ততটা আশঙ্কাজনক নয় যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। সূত্রের দাবি, টালা থানার ওসি-কে প্রথমে দমদমের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর পরিচয় দিলেও সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ভর্তি করাতে অস্বীকার করে ওই হাসপাতাল।
এর পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চিনার পার্কের এক হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি না হতে পেরে তাঁরা চলে যান সোজা দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরে। সেখানকার একাধিক নামী বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারেননি টালা থানার ওসি অভিজিৎ মন্ডল। পরে পার্ক স্ট্রিটের কাছে এক নার্সিংহোমে ভর্তি আছেন তিনি। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এখনও তিনি ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসাধিন থাকায় তাঁর জায়গায় অন্য আধিকারিককে দায়িত্ব দিয়েছে লালবাজার। কিন্তু এই আবহেই এবার এক অভিনব মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে শনিবার বিকেলে। নাগরিক সমাজের তরফে এই মিছিল হল এক্সাইড মোড় থেকে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে পরের শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হবে শুনে টালা থানার ওসি নাকি অসুস্থ চলুন দেখা করে আসি (অ)সুস্থ ওসির সাথে।
Discussion about this post