আর জি কর আবহে এবার বাংলার ছ’টি আসনে উপনির্বাচন হল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল অনেক বছর পর এবারই প্রথম বাম-কংগ্রেসের জোট হয়নি। আরও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল এককভাবে লড়েও প্রায় সর্বত্রই জামানত জব্দ হল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের। এমনকি কোনও কোনও জায়গায় নোটার সঙ্গে লড়াই করেছেন দু-দলের প্রার্থীরা।
উত্তরবঙ্গের মাদারিহাটে এবার প্রথমবারের জন্য জোড়াফুল ফুটল পদ্মকে পিছনে ফেলে। এখানে বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীদের প্রায় লজ্জায় ফেলে দিয়েছিল নোটা। বেশ কয়েকটি রাউন্ড পর্যন্ত নোটায় পড়া ভোট তাঁদের থেকে এগিয়ে ছিল। তবে ভোটগণনার একেবারে শেষে এসে বামফ্রন্টের আরএসপি প্রার্থী এবং কংগ্রেস প্রার্থী সামান্য কিছু ভোটে এগিয়ে যান। মাদারিহাটে আরএসপি প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ৩,৪১২ এবং কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ৩,০২৩ ভোট। সেখানে নোটায় ভোট পড়েছে ২,৮৫৬ ভোট। কোচবিহারের সিতাই আসনেও একই চিত্র। সিতাইয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পেয়েছেন ৩,৩১৯ ভোট। সেখানে নোটায় পড়েছে ১,৩১৭ ভোট। তবে এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থীর ভোট অনেকটাই বেশি। সিতাইয়ে কংগ্রেস মোট ৯,১৭৭ ভোট পেয়েছে।
মেদিনীপুরে কংগ্রেস প্রার্থী এবং নোটার মধ্যে ভোটের ব্যবধান মাত্র ১,৩৩৫। মেদিনীপুরে বামফ্রন্টের প্রার্থী ১১,৮৯২ ভোট পেয়েছেন, সেখানে কংগ্রেস প্রার্থীর ভোট ৩,৯৫৯ এবং নোটায় পড়েছে ২,৬২৪ ভোট। বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় নোটা এবং কংগ্রেস প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ২,৮২২ ভোট সেখানে নোটায় পড়েছে ২,৪৪৬ ভোট। তবে এই আসনে বাম প্রার্থী প্রায় ২০ হাজারের কাছাকাছি ভোট পেয়ে মুখ রক্ষা করেছেন। উত্তর ২৪ পরগণার নৈহাটিতে তৃণমূল প্রার্থী বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন। সেখানে বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীর মিলিত ভোট ১০ হাজারের সামান্য বেশি। আর নোটা থেকে সামান্য বেশি ভোট পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। হাড়োয়ায় আইএসএফ প্রার্থী ২৫ হাজার ৬৮৪ ভোট পেয়ে ভালো লড়াই দিয়েছেন, তবুও এখানে তৃণমূল প্রর্থীর জয়ের ব্যবধান এক লক্ষের বেশি। অপরদিকে কংগ্রেস প্রার্থী লড়াই করেছেন নোটার সঙ্গে। এই ভোটের যা ফলাফল, তাতে রাজ্যে কংগ্রেসের সাংগঠনিক দুর্বলতার করুণ চিত্র উঠে আসছে। আবার এই আর জি কর ইস্যুতে বামফ্রন্ট যেথানে নবজাগরণের স্বপ্ন দেখেছিল, সেখানে তাঁদের জামানত জব্দ হওয়ার ঘটনা আবারও প্রমান করল বাংলার বুকে বামফ্রন্ট কার্যত নিশ্চিহ্ন।
Discussion about this post