বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো তো এসেই গেল। ইতিমধ্যেই অনেকের কেনাকাটা কমপ্লিট। এবার পুজোর কটা দিন কোথায় কিভাবে ঠাকুর দেখবেন সেই প্ল্যান নিয়ে ব্যস্ত সকলে। তাহলে আসুন কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে চযে বেরিয়ে কোন কোন বড় পুজো দেখা যায়, অথচ খুব বেশি হাঁটাহাঁটি করতে হবে না, সেটা জানা যাক।
উত্তর কলকাতার পুজো এখন শুরু হয় দমদম পার্ক দিয়ে। ষষ্ঠীতে অনেকেরই অফিস হয়ে পুজোর ছুটি পড়ে। তাই অফিস থেকে বেরিয়ে বন্ধুবান্ধব বা বান্ধবীকে নিয়ে দমদম পার্ক ও শ্রীভূমির ঠাকুর দেখে নিতে পারে। ফলে বিধাননগর থেকে বাস বা অটো নিয়ে সোজা চলে আসুন দমদম পার্ক। এখানে দমদম পার্ক তরুণ দল, তরুণ সংঘ, ভারত চক্রের অসাধারণ থিমের মণ্ডপ এবং ঠাকুর দর্শন করে সোজা চলে আসুন শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে। এই পুজো বিগত কয়েক বছর ধরে সুপার ডুপার হিট হচ্ছে। এবারও দক্ষিণ ভারতের এক বিখ্যাত মন্দিরের আদলে মণ্ডপ হয়েছে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে। এরপর রয়েছে লেকটাউন অধিবাসীবৃন্দ। এই পুজোগুলি দেখে যদি হাতে সময় থাকে তাহলে সোজা চলে আসুন উল্টোডাঙায়। এই চত্বরে রয়েছে তেলেঙ্গাবাগান সার্বজনীন, নলীন সরকার স্ট্রিট, চালতাবাগানের পুজো। ষষ্ঠীর দিন এই পর্যন্ত ইতি টেনে মন ভালোলাগা নিয়ে বাড়ি ফিরুন।
সপ্তমীর দিন দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে পড়ুন দমদম স্টেশন থেকে। প্রথমেই চলে আসুন টালা এলাকায়। টালা প্রত্যয়, ১৫ পল্লীর মতো দুর্দান্ত পুজো দেখে সোটা চলে আসুন বাগবাজারের দিকে। প্রথমেই বাগবাজার সর্বজনীন দেখে সোজা কুমারটুলি। এখানেই আপনি পর পর পেয়ে যাবেন, কুমারটুলি পার্ক, কুমারটুলি সর্বজনীন, আহিরিটোলা সর্বজনীন, জগৎ মুখার্জী পার্ক, কাশী বোস লেন, চোরবাগান সর্বজনীনের পর হাতিবাগানের দিকে এসে হাতিবাগন সর্বজনীনের ঠাকুর দর্শন করে এদিনের মতো ইতি টানুন।
এ বছর অষ্টমীর অঞ্জলী হবে সকাল সকাল। তাই হাতে সময়ও পাওয়া যাবে অনেকটা। ফলে সকাল সকাল অঞ্জলী দিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন, এদিন গন্তব্য হোক দক্ষিণ কলকাতা। দমদম বা বরাহনগর থেকে মেট্রো ধরে সোজা কালীঘাট। মেট্রো এখানে নেমেই আপনি দেখে নিতে পারবেন প্রায় এক ডজন নজরকাঁড়া পুজো। কালীঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়েই রয়েছে সমাজসেবী, বালিগঞ্জ কালচারাল, একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহী পার্ক, আদি লেক পল্লি, ৬৬ পল্লি, হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীন, ত্রিধারা সম্মিলনী, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, মুদিয়ালি, শিব মন্দির, চেতলা অগ্রণী-সহ আরও বেশকিছু পুজো। সাবেকিয়ানা এবং থিমের পুজোর মিশেল আপনারা দেখতে পাবেন এই চত্বরে। সেই সঙ্গে রয়েছে পেটপুজোর জন্য দুর্দান্ত সব রেস্তরাঁ। ফলে অষ্টমীর দিনটা কাটবে হই হুল্লোর করেই।
নবমীর দিন শুরু করতে পারেন হাজরা থেকে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে নামতে হবে যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনে। প্রথমেই পেয়ে যাবেন হাজরা পার্কের পুজো। এরপর একে একে ২৩ পল্লী, মাতৃ মন্দির, বকুলবাগান সর্বজনীন, ভবানীপুর সর্বজনীন, ৭৫ পল্লী, সংঘমিত্রা, ৭৬ পল্লী, ভবানীপুর স্বাধীন সংঘ, সুরুচী সংঘ, মুদিয়ালী ও শিব মন্দির দেখে ফিরে আসুন সোটা ম্যাডক্স স্কোয়ার। নবমী নিশির কিছুটা সময় এই ম্যাডক্স স্কোয়ারে হই হুল্লোর করে খাওয়া-দাওয়া করে পুজোর আসল মেজাজ নিয়ে বাড়ির ফেরার পথ ধরতে পারেন।
এরপর আসছে বিদায়ের সুর। তবে কলকাতার বেশিরভাগ পুজো দশমীতে বিসর্জন হয় না। তাই বেলা করে বেরিয়ে পডুন কলকাতার উদ্দেশ্যে। দমদম বা কবি সুভাষ থেকে মেট্রো ধরে সোজা চলে আসুন শোভাবাজার। মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে কিছুটা হেঁটেই পৌঁছে যাবে শোভাবাজার রাজবাড়ি। কিছুটা সময় কাটিয়ে বাগবাজার সর্বজনীনে সিঁদুর খেলায় অংশ নিতে ভুলবেন না। এবার বাগবাজার ঘাটে গিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেখে ফিরে আসুন বাড়ি।
Discussion about this post