সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষা কর্মী এবং অশিক্ষক কর্মচারীর। যা ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এতগুলো ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ এখন কি হবে, কে দায়িত্ব নেবে, উঠছে প্রশ্ন। শুধু তাই নয়, মমতা সরকারকেই দুষছে বিরোধীরা। যদিও চাকরিহারাদের নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ডেকে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হবে, সেটা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
২০১৬ সালের এসএসসির ২৫৭৫২ জনের চাকরি যেতে রাজ্য সরকার কাঠগড়ায় উঠেছে ঠিকই তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা বেঁচে গেলেন বলে বলা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তের কোনও প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ হাইকোর্টের যে নির্দেশ ছিল, যে সিবিআই তদন্ত করে দেখবে এই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করতে গিয়ে সত্যি সত্যি কোনও দূর্নীতি হয়েছে কিনা। এর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের তরফে সিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সিবিআই চাইলে মন্ত্রীসভার যে কোনও সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তারপরে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। আর সেই মামলাটি এদিন রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যপালের অনুমোদনও নেওয়া হয়েছিল। আর এই কারণেই আদালত আর হস্তক্ষেপ করবে না। কারণ এটা করলে সাংবিধানিক পরিকাঠামোতে হস্তক্ষেপ করা হবে।
অর্থাৎ অনেকে বলছেন, বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু এদিনের সুপ্রিম নির্দেশের পর যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ জুড়ে। আর এই আবহে চাকরি প্রার্থীদের প্রায় ১৩টি মঞ্চ একসঙ্গে ২১ শে এপ্রিল এই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলন করে চাকরিহারারা ঘোষণা করে দেয়। সংবাদিক বৈঠক থেকেই মঞ্চের নেতৃত্বের তরফে বলা হয়, কয়েকটি সংগঠন ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছে। আগামীতে তাঁরাও এই মঞ্চে সামিল হবে বলেই আশাবাদী তাঁরা। এমনকি সেদিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তারা। অর্থাৎ এই কলকাতার রাজপথ আরও একটি ঐতিহাসিক মিছিলের সাক্ষী থাকতে চলেছে। এখন দেখার, কি পরিস্থিতি তৈরি হয় সেদিন।
Discussion about this post