গরমকাল আসলেই অত্যধিক ঘামের সমস্যা দেখা দেয়। তার সঙ্গে বহু মানুষই ঘামের দুর্গন্ধের সমস্যায় ভোগেন। ঘামের দুর্গন্ধের সমস্যা এমনই এক সমস্যা যা ছোট থেকে বড় সকলেরই হতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘামের দুর্গন্ধ তখনই দেখা দেয়, যখন ত্বকের মধ্যে ঘামের মাধ্যমে জীবাণুর আক্রমণ হয়। এছাড়াও বেশ কিছু অসুখের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন সময়ে আমরা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে পারফিউম ব্যবহার করে থাকি।কিন্তু পারফিউম আমাদের শরীরকে দীর্ঘক্ষণ দুর্গন্ধ মুক্ত রাখে না।তার জন্য বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। যার ফলে স্থায়ী ভাবে জীবাণু ও দুর্গন্ধ মুক্ত থাকতে পারা যায় । জেনে নিন সেই টিপস গুলি কি কি
সাধারণ পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি:
সাধারণ পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা, যেমন গ্রীষ্মকালে দিনে দুবার স্নান করলে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া দূর হয় ।যেহেতু গরম কালে খুব ঘন ঘন ঘাম হয় , তাই ব্যাকটেরিয়া জাতীয় সাবান এবং গরম জল দিয়ে আন্ডার আর্মস বার বার ধুন। তাতে বগলে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় , এবং দুর্গন্ধ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও সাদা রঙের হালকা জাতীয় সুতির ঢিলাঢোলা জামা পড়ুন।
খাবার দাবারে বিধিনিষেধ
গরমে স্বাস্থ্যকর সবুজ শাক পাতা জাতীয় খাবার বেশি করে খান।সাথে জলপান করুন বেশি করতে।পারলে নুন জল , কারণ ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে নিয়মিত লবনাক্ত জল বের হয়ে যাচ্ছে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যেমন বিরিয়ানি , চাউমিন , স্পাইসি খাবার এগুলো একদম এভোয়েড করে চলুন। অপরদিকে ক্যাফেইন একটি অত্যন্ত কার্যকরী উদ্দীপক। যা অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থিগুলির কার্যকলাপকে প্রোজ্বলিত করে। এভাবে, ক্যাফেইন, মশলাদার খাবার, অ্যালকোহল, স্যাচুরেট ফ্যাট, চিনি এবং সিগারেট এড়াতে চেষ্টা করুন, যা আন্ডারআর্মের গন্ধে অবদান রাখতে পারে।
নিম পাতার ব্যবহার
একমুঠো নিম পাতা ও অল্প জল নিয়ে ভালো করে নিমপাতার পেস্ট তৈরি করুন। ওই পেস্ট-এর প্রলেপ দিন শরীরের ঘাম প্রবণ অংশে। প্রলেপ শুকিয়ে গেলে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিম পাতায় অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল, অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে। তাই নিম পাতা সমস্তরকম খারাপ ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে যা দুর্গন্ধ তৈরি করতে পারে।
লেবুর রসের ব্যবহার
এক বাটি জলে একটি পাতিলেবুর রস মেশান। ওই রস দিয়ে বগল ধুয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়া ত্বক খুব সংবেদনশীল না হলে বগলে সরাসরি পাতিলেবুর রসের প্রলেপ দিয়ে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। লেবুর রস অম্লধর্মী যা ত্বকের পিএইচ লেভেল কমিয়ে দেয়। তাই ত্বকে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে না।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার:
বলা হয়ে থাকে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার আন্ডারআর্মের গন্ধও দূর করতে সক্ষম। একটি পাত্রে কিছু জল নিন এবং তাতে দুই চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার দিন। এবার এই জল দিয়ে আপনার আন্ডার আর্মস ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি কিন্তু বেশ কার্যকর হতে পারে।
টম্যাটোর রস
বেশ কিছু রান্না আছে যেগুলি টম্যাটো ছাড়া অসম্পূর্ণ। তবে টম্যাটোর ভূমিকা কিন্তু শুধু রান্নাতেই সীমাবদ্ধ নেই। গায়ের গন্ধ দূর করতেও অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপ্টিক বৈশিষ্ট্য যুক্ত টম্যাটো অত্যন্ত কার্যকরী। টম্যাটোর রস খাওয়ার অভ্যাস শরীরের ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ কম করে। টম্যাটোর রস খেলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। ফলে ঘাম কম হয়।
বেকিং সোডা
কেকে জমাটি ভাব আনা ছাড়াও শরীরের গন্ধ দূর করতেও বেকিং সোডা দারুণ কাজ করে। স্নানের জলে এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। প্রতি দিন না হলেও এক দিন অন্তর বেকিং সোডা মিশ্রিত জলে চান করতে পারেন। ঘাম হলেও শরীর থেকে দুর্গন্ধ বেরোবে না।
Discussion about this post