না, দিল্লি মুম্বই বা আহমেদবাদ নয়, ভারতের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড বা ভুগর্ভস্থ রেলস্টেশন তৈরি হচ্ছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গেই। ভাবছেন কি এমন বড় ব্যাপার এটা? কলকাতায় তো বহু যুগ আগে থেকেই আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন আছে। হ্যাঁ আছে, তবে সেটা মেট্রো স্টেশন। আজ আমরা বলবো দেশের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড ব্রডগেজ রেলস্টেশন সম্পর্কে। অর্থাৎ দূরপাল্লার বা স্বল্প দূরত্বের যাত্রীবাহী ট্রেনের স্টেশন, যা তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ মাটির নিচে। সঠিকভাবে বললে পাহাড়ের কোলে সুড়ঙ্গের ভিতর তৈরি হচ্ছে এই রেলস্টেশন।
আর মাত্র মাস কয়েকের অপেক্ষা, এরপরই ভারতের রেল মানচিত্রে যুক্ত হতে চলেছে আরও একটি রাজ্য। সেই রাজ্যটি হল সিকিম। ভারতীয় রেল সূত্রে খবর, তিন ধাপে ব্রডগেজ ট্রেনের লাইন পৌঁছবে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক হয়ে চিন সীমান্ত নাথুলা পর্যন্ত। প্রথম ধাপে খুব শীঘ্রই পাহাড়ের বুক চিরে ট্রেন পৌঁছে যাবে সিকিমে। পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে একটি লাইন সোজা পৌঁছে যাচ্ছে সিকিমের রংপো শহরে।
পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ কাজ চলছে জোরকদমে। যা অধিকাংশ পাহাড় কেটে হচ্ছে। পাহাড়ি এই পথে মসৃনভাবে ট্রেন চালাতে ১৪টি টানেল বা সুরঙ্গ এবং ১৭টি ছোট-বড় রেলব্রিজ নির্মাণ করতে হচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ হল সুড়ঙ্গের মধ্যে আস্ত একটি রেলস্টেশন। যা ভারতের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড ব্রডগেজ রেলস্টেশন। স্টেশনটির নাম তিস্তা বাজার, যা পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলায় অবস্থিত।
তিস্তা বাজার রেলস্টেশন এই রেলপথে সাত নম্বর টানেলে অবস্থিত। দুটি লাইন থাকবে এই সুরঙ্গে। তবে প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে একটি। প্ল্যাটফর্মটির দৈর্ঘ্য ৬২০ মিটার হলেও পুরো সুরঙ্গের দৈর্ঘ্য ৫৬০ মিটার। এই প্ল্যাটফর্মে ২২ কামরার একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ট্রেন দাঁড়াতে সক্ষম। এই টানেলে যেহেতু যাত্রীদের ভিড় থাকবে তাই বায়ু চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপাতকালীন পরিস্থিতির জন্য এই স্টেশন থেকে বের হওয়ার ৬টি আলাদা সুরঙ্গ তৈরি হচ্ছে। ভৌগলিক দিক থেকে তিস্তা বাজার স্টেশন অতি গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে দার্জিলিংয়ের দুরত্ব মাত্র ৩৪ কিলোমিটার। ফলে এখানে নেমে মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে পাহাড়ের রানী দার্জিলিংয়ে।
Discussion about this post