একটা সময় ছিল, যখন ভারতীয় রেলে যখন কয়লাচালিত স্টিম ইঞ্জিন ছিল। স্বাধীন ভারতেও এই স্টিম ইঞ্জিন অনেকদিন রাজ করেছে। এরপর এল ডিজেল ইঞ্জিন, যা এখনও ভারতীয় রেলে বিদ্যমান। তবে বর্তমানে ভারতীয় রেল গোটা দেশের রেল নেটওয়ার্ক ১০০ শতাংশ বিদ্যুতিকরণের কাজ করছে। ফলে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ইলেকট্রিক ইঞ্জিনও অবশ্য রেলের বহরে যুক্ত হয়েছে প্রায় অর্ধ শতাব্দী হল। সেই ১৯২৭ সালে ভারতে প্রথম বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভ চালিত যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হয়। WCP-1 ইলেকট্রিক লোকমোটিভ আমদানি করা হয়েছিল প্রথমবার। এরপর স্থাপিত হয় চিত্তরঞ্জন লোকমোটিভ ওয়ার্কস। যা ভারতে প্রথম কোনও ইলেকট্রিক রেলইঞ্জিন কারখানা। যাইহোক আমরা আজ আলোচনা করছি এমন একটি ইলেকট্রিক লোকমোটিভ সম্পর্কে যা দেখতে দেখতে ২৫ বছর পার করে ফেলল সাফল্যের সঙ্গে। সেটি হল WAP7 ইলেকট্রিক লোকমোটিভ।
আমরা যারা রোজ ট্রেনে যাতায়াত করি বা মাঝেমধ্যে যাতায়াত করি, তাঁরা প্রত্যেকেই প্রায় দেখেছি যাত্রীবাহী ট্রেন টানতে একটি দুধ সাদা রঙের মাঝখানে একটি লাল রিবন টানা ইলেকট্রিক ইঞ্জিনকে। সেটিই হল WAP7 সিরিজের ইলেকট্রিক ইঞ্জিন। যা ভারতীয় রেলের সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০০০ সালের ১০ মে পশ্চিমবঙ্গের চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা থেকে প্রথম WAP7 সিরিজের ইলেকট্রিক লোকোমোটিভটি তৈরি হয়ে ট্র্যাকে নেমেছিল। সেই অর্থে এটা এই সিরিজের রজতজয়ন্তী বর্ষ। প্রথম দুধসাদা WAP7 ইঞ্জিনটির নাম দেওয়া হয়েছিল নবকিরণ। সেই মতো বলা যায় সার্থনামা ছিল সেই ইঞ্জিনটি। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতীয় রেলে ১৬৭৬টি WAP7 কার্যকর রয়েছে।
WAP7 লোকোমোটিভের কার্যক্ষমতা ৬,৩৫০ হর্স পাওয়ার। এটি মূলত প্যাসেঞ্জার বা যাত্রীবাহী ট্রেন টানার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে ভারতের সমস্ত রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দী-সহ সমস্ত প্রিমিয়াম ও সুপারফাস্ট ট্রেনে এই সিরিজের রেলইঞ্জিনই ব্যবহার করা হয়। রেল সূত্রে জানা যায়, ঘণ্টায় ১৪০ কিমি গতিবেগে ২২ কামরার যাত্রীবাহী ট্রেনকে অনায়াসে ছুটিয়ে নিয়ে যেতে পারে একটি WAP7 লোকোমোটিভ। তবে ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ বেঁধে দেওয়া হয়েছে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। ২৪ বছর পূর্ণ করেও WAP7 ইঞ্জিন ভারতীয় রেলে রাজ করছে বলা যায়।
Discussion about this post