রেলগাড়ির কোচের মধ্যে উঠে এল আস্ত একটা স্কুল। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র স্থাপন হল রেল কোচের ভিতরে। দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের গ্রামে তৈরি হল প্রতীকী রেলপথ। দিন-দুপুরে ঝিঁঝি পোকার ডাকে কান ঝালাপালা হওয়ার পালা। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের অন্তর্গত এক প্রত্যন্ত গ্রাম রুদড়া পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর । সেই গ্রামই এখন উঠে এসেছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। গ্রামে বসেছে নতুন রেলপথ। রেলপথে জুড়েছে নতুন নীল সাদা রঙের রেল কোচ। তবে স্টেশন নেই কোন। এই ট্রেনের চাকাও গড়াবে না কোনদিন। কারণ একটাই। এর সবটাই প্রতীকী। রেল কোচের ভেতরে আগামী দিনে শুরু হতে চলেছে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার। অনেকেই মনে করছেন রেল কোচে বসে স্কুলের পড়াশোনা, পড়ুয়াদের আকর্ষণ করবে অনেকটাই। স্কুল ছুটের সংখ্যা কমবে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট গ্রামে আগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর ছিল না। বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল গ্রামের অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের ঘর তৈরির। সেই দাবি এবার মিটল। তবে স্কুল শুরু হয়নি এখনও। আরও কয়েকটা দিন বাকি। RIDF প্রকল্পের টাকা থেকে তৈরি হল সেন্টারের ঘর। যার জন্য ব্যয় হল প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা। কংক্রিটের তৈরি কোচের মধ্যে রয়েছে দুটি দরজা, ভিতরে-মাঝে হলঘর, একপাশে রান্নাঘর, একপাশে শৌচাগার। চত্বরে বসানো হয়েছে একটি নলকূপও। আট থেকে আশি, প্রশাসনের এই উদ্যোগে সকলেই খুশি। এলাকায় রেল যোগাযোগ নেই। অনেক কচিকাচারাই রেলপথ দেখেনি কখনও।
রেল কোচের আদলে তৈরি স্কুলে অচিরে রথ দেখা কলা বেঁচা দুটোই হবে। একদিকে লেখাপড়াও হবে অন্যদিকে রেলকোচ দেখাও হবে। ইতিমধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে উৎসুক মানুষজনের আনাগোনা বেড়েছে নারাণপুর গ্রামে। রেল কোচের আদলে স্কুলঘরটি মোবাইল ক্যামেরায় বন্দী করা হচ্ছে। অজ পাড়াগায়ে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে সকলে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকেই গ্রামের বাচ্চারা প্রথম বর্ণপরিচয় শেখে। বাচ্চারা যাতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যেতে পছন্দ করে সেই কথা ভেবেই অভিনব পরিকল্পনাটি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এলাকায় যে রেল যোগাযোগের অভাব রয়েছে সেই কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
Discussion about this post