প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন স্ব-কন্যা অনুব্রত মণ্ডল। জামিনে মুক্ত হয়ে বাবা-মেয়ে সবে বোলপুরে ফিরেছেন। এক-দুই দিন বিশ্রাম নিয়েই এবার তিনি বোলপুরের বাড়ি থেকে ঘুরে এলেন পিতৃ পুরুষের ভিটায়। আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যেই তাঁরা গ্রামের বাড়ি গিয়ে মন্দির পরিদর্শন করলেন। এরপরই মন খারাপের সুর শোনা গেল বীরভূমের একদা দোর্দোণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার গলায়। প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় গোটা গ্রামকে পেট পুজো করান অনুব্রত। তবে এবার উল্টো সুর তাঁর মুথে। হঠাৎ করেই বলে উঠলেন “আর্থিক অবস্থা খারাপ”। যা নিয়ে জোর জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে।
তিহার থেকে ফিরে সব টাকা ভ্যানিস?
গরু পাচার মামলায় কোটি কোটি টাকার আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। ২০২২ সালের ১১ আগস্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। পরবর্তী সময় ইডি অনুব্রত মণ্ডলের ১১ কোটি ৫৬ লাখের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল বলেই জানা যায়। যদিও অনুব্রত আইনজীবী জানিয়েছিলেন, এই অর্থ একাধিকবার লটারির টিকিট জেতার সূত্রে এসেছে। তবে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট আদালতে দাবি করেছিল, অনুব্রত লটারির টিকিট ভয় দেখিয়ে বিজেতাদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজের বা মেয়ের নামে দেখিয়েছেন। আপাতত সেই মামলা আদালতে বিচারাধীন। অনুব্রত এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা এখন জামিনে মুক্ত। কিন্তু এবার দুর্গাপুজোয় তাঁর যে টাকা খরচ করার সামর্থ নেই, সেটা ফলাও করে দাবি করেছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি।
এখন এই প্রশ্নই সামনে আসছে, তবে কি এর আগে দেশের বাড়িতে দুর্গাপুজো বা বোলপুরে নিচুপট্টির বাড়িতে কালীপুজোয় সব খরচ কি লটারিতে জেতা টাকাতেই করতেন তিনি? তাহলে সেই টাকা কোথায় গেল? চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা ৫ – ৬ বার লটারি জিতেছেন বলে স্বীকার করেছেন। সুকন্যা ও অনুব্রত দুটি ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের ও একটি ১ কোটি টাকা মূল্যের লটারি জিতেছিলেন। লটারিতে জেতা টাকা তো কোনও ভাবেই দুর্নীতির টাকা হতে পারে না। তাহলে ইডি কিসের টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। যেখানে গরু পাচার মামলায় ইডি অনুব্রত এবং তাঁর মেয়ের মোট ১১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে বলেই খবর।
Discussion about this post