গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় উপস্থিত হওয়া সাধু-সন্নাসীরা বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। এক কাঠি উপরে গিয়ে গঙ্গাসাগর মেলায় আসা নাগা সন্নাসীরা হুঁশিয়ারি দিলেন, মাত্র এক ঘণ্টা সময় দিলেই তাঁরা বাংলাদেশকে ঠান্ডা করে আসবেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের জেরে পতন হয় শেখ হাসিনার শাসন। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এরপরই সে দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নেমে এসেছে ভয়ানক খাঁড়া। এরপর কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। বাংলাদেশের নতুন তদারকি সরকারের কার্যকালও পেরিয়েছে পাঁচ মাস।
কিন্তু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার ও হামলার ঘটনা কোনও ভাবেই কমেনি। ভারত সরকারের তরফে বারবার হিন্দুদের উপর অত্যাচার হওয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ব্রিটেন, আমেরিকার মতো বহু দেশ বাংলাদেশের তদারকি সরকারকে এই অত্যাচার বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু, তা দমন করার খুব একটা উদ্যোগ দেখায়নি মুহাম্মদ ইউনূসের তদারকি সরকার। বরং ইসকনের প্রাক্তন কর্তা তথা বাংলাদেশ পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে অন্যায়ভআবে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে জেলে পুরেছে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের নাগা সন্নাসীরা। গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধু-সন্নাসীরা বাংলাদেশে হিন্দু নাগরিকদের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন।
মাস খানেক আগেই বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তারা হুমকি দিয়েছিলেন কলকাতা দখল করার। যা নিয়ে এপাড় বাংলার মানুষজন তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। এবার গঙ্গাসাগরে আসা নাগা সন্নাসীরা বাংলাদেশকে দিলেন চরম হুঁশিয়ারি। তাঁদের বক্তব্য, “মাত্র এক ঘণ্টা সময় দিলে বাংলাদেশকে দেখে নেব”। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বাংলাদেশে হওয়া হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে সরব হয়েছেন বেশ কয়েকবার। এমনকি রাজ্য বিধানসভাতেও নিন্দা প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশি মুসলিমদের বাড়বাড়ন্ত দেখে সিঁদূরে মেঘ দেখছেন ওয়াকিবহাল মহল। অথচ এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতারা বরাবর কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিএসফকে দায়ি করছে। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলায় আসা নাগা সন্নাসী তারাপুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কুর্সি আসে ও যায়। তাই যা হচ্ছে সেটা ঠিক হচ্ছে না, এটা বুঝতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এই নাগা সন্নাসীও দাবি করেন, মাত্র এক ঘন্টা সময় দিলেই তাঁরা বাংলাদেশকে উচিৎ শিক্ষা দিতে পারেন।
গঙ্গাসাগর মেলায় আসা আরেক সন্নাসী পণ্ডিত অমন উপাধ্যায় জানালেন, সনাতন ধর্ম সবচেয়ে প্রাচীন। এই ধর্মকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। যুগ যুগ ধরে অনেকেই চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেনি। বাংলাদেশেও হিন্দুদের ধ্বংস করা যাবে না। প্রাচীন সনাতন ধর্মমতে নাগা সন্নাসীরা হলেন হিন্দু ধর্মের রক্ষক। তাঁদের উপরেই হিন্দুধর্মকে রক্ষা করার দায়িত্ব রয়েছে। ভগবান শিবের উপাসক নাগা সন্নাসীরা সবসময় নিজেদের সঙ্গে একটি অস্ত্র রাখেন। ইতিহাসেও বহু উদাহরণ রয়েছে, যেখানে নাগা সন্নাসীরা হিন্দু ধর্ম এবং ধর্মীয় স্থানকে রক্ষা করতে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। এবারও গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নাগা সন্নাসীরা বাংলাদেশকে দিলেন চরম হুঁশিয়ারি। যদি মুহাম্মদ ইউনূসের তদারকি সরকার হিন্দুদের উপর হওয়া অত্যাচার বন্ধ না করে, তাহলে তাঁরা এক ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশকে ঠান্ডা করে আসতে সক্ষম।
Discussion about this post