হাজারেও তীর্থক্ষেত্রের মধ্যে অন্যতম হল উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ মন্দির। উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল হিমালয়ের পর্বতের কোলে কেদারনাথ শহরের মন্দাকিনি নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দিরটি, ১২ জ্যোর্তিরলিঙ্গের মধ্যে অন্যতম বলে মেনে থাকেন হিন্দু ধর্মাম্বলম্বীরা। তবে দেশের অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মত এই স্থানে সারা বছর যেতে পারে না ভক্তরা। মন্দিরে যাওয়ার জন্য নেই কোনও সড়ক পথ। তাই এই মন্দিরে জ্যোর্তিলিঙ্গ দর্শন করতে হলে একমাত্র ভরসা ট্রেকিং। সারা বছর নয়, বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভক্তদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এই মন্দিরের প্রবেশ দ্বার। নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয় শীত। সেই সময় প্রবল ঠাণ্ডায় কেদারনাথে তুষারপাত হওয়ায় বন্ধ থাকে মন্দিরের যাওয়ায় প্রায় সব কটি রাস্তা। উত্তরাখণ্ডের একদিকে প্রবল ঠাণ্ডা অন্যদিকে, প্রায় তুষারপাতের জেরে প্রায় ৬ মাসের জন্য বন্ধ রাখা হয় এই মন্দিরের গর্ভগৃহ। তখন দেবাদিদেবের মূর্তি সহ অন্যন্য মুর্তিদের কেদারখণ্ড থেকে উখিমঠে স্থানান্তরিত করে, সেখানেই পুজা অর্চনা করা হয়। প্রতি বছরই মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কেদারনাথ মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তখন পুনরায় মন্দিরে দেবাদিদেব সহ অন্যান্য বিগ্রহদেরও পুনঃস্থাপিত করা হয়। মন্দিরের এই গর্ভগৃহ দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে কার্তিক মাস পর্যন্ত। অর্থাৎ কালীপুজোর পরে আবারও বন্ধ হয়ে যায় মন্দিরের গর্ভগৃহ। এবছরও তার অন্যথা হয়নি। ভক্তদের কথা ভেবে এবছর মন্দিরের দরজা খোলার সময়সীমা বাড়ালো কেদারনাথ – বদ্রীনাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ।
মন্দিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতি বছর মন্দির খোলার আগে থেকে পুজো দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হয় দর্শনার্থীদের। এবছরও তার অন্যথা হয়নি। এখনও পর্যন্ত পুজো দেওয়ার জন্য প্রচুর আবেদন আসছে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে। চলতি বছর আগামী ১০ই মে থেকে খুলছে মন্দিরের মূল গর্ভগৃহ। ভোর সাড়ে ৪টে থেকে দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত ভক্তরা কেদারনাথ ধামে প্রবেশ করতে পারবেন। এরপর দুপুরে দেবাদিবেদকে ভোগ নিবেদনের জন্য আধ ঘন্টা মন্দিরের দরজা বন্ধ রাখা হবে। তারপর আবার বিকেল ৪ টে থেকে সন্ধ্যে ৭ টা পর্যন্ত ভক্তদের জন্যে খোলা থাকবে মন্দিরের গর্ভগৃহের মূল ফটক। এরই মাধ্যে ফের একবার সন্ধ্যা আরুতির জন্য বন্ধ থাকবে মন্দিরের দরজা। এরপর আবারও খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। রাত ১২ টা পর্যন্ত জ্যোর্তিলিঙ্গ দর্শন ও পুজো দেওয়ার সুযোগ পাবেন ভক্তরা। এমনকি রাত ১২টায় শৃঙ্গার দর্শনও করতে পারবেন দর্শনার্থীরা বলে জানায় মন্দির কর্তৃপক্ষ। আগে সাধারণত সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেদারনাথ মন্দিরে পুণ্যার্থীদের প্রবেশের অনুমতি ছিল। ভিড় সামাল দিতেই এবার সময়সীমা বাড়িয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত করা হয়েছে বলে মন্দির সূত্রে খবর। শুধু সময়সীমায়ই নয়, দিনে ৩৬ হাজার ভক্তকে মন্দিরে প্রবেশ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেদরনাথ-বদ্রীনাথ মন্দির কমিটি।
Discussion about this post