খুব সম্ভবত এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে চোখের জলেই বিদায় নিতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। আমেরিকার মত প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলের কাছে হারের পর যত না কষ্ট হয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশী যন্ত্রনায় ভেঙে পড়েছে গোটা দেশ। পাকিস্তান টিম ভারতের কাছে এই ভাবে হেরে যাওয়ায় গোটা পাকিস্তান জুড়েই শুরু হয়েছে ঝড়। শুধু পাকিস্তানের আমজনতা নয়, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তনী ক্রিকেটারারও। ম্যাচের শেষে চোখে জল নিয়ে হতাশ দেখায় নাসিম শাহকে। বল হাতে তিনি নিয়েছিলেন তিন উইকেট । আর এই একটা ছবিই দেখেই স্পষ্ট হয়ে যায় পাকিস্তানের হতাশার চিত্রটা। শোয়েব আখতার সমাজমাধ্যমে বলেন, “ম্যাচ দেখে আমি হতাশ ও দুঃখিত। সারা দেশ মর্মাহত। দেশের জার্সি পরে নামা মানে দেশকে গর্বিত করার সুযোগ পাওয়া। আর এই সুযোগ হেলায় হারাল পাকিস্তান।” তিনি ক্ষোভের সঙ্গে আরও বলেন, “জয়ের জন্য নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে জানতে হয়। আমার মনে হয় পাকিস্তান জেতার যোগ্য দলই নয়।”
আরেক প্রাক্তন তারকা ওয়াকার ইউনিস ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের এই শোচনীয় হারে। অন্যদিকে তিনি মুক্তকন্ঠে প্রশংসা করেছেন ভারতীয় বোলারদের বিশেষ করে যশপ্রীত বুমরার। ইউনিস বলেন, “বুমরা সত্যিকারের কিংবদন্তি। গত বছর একদিনের বিশ্বকাপে আমদাবাদের মাটিতে ও নিখুঁত জায়গায় বল রেখেছিল। মাঠ পাল্টে গেলেও ওর সেই দক্ষতার পরিবর্তন হয়নি । এখানেও নিখুঁত লাইন লেংথে বল রেখে হারিয়ে দিল পাকিস্তানকে।” পাক অধিনায়ক বাবর আজ়ম হারের জন্য দায়ী করছেন ব্যাটসম্যানদের অতিরিক্ত ডট বল খেলাকে। তিনি বলেছেন, “আমরা বোলিং ভাল করেছি। ব্যাটিংয়ের সময় নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছি এবং অতিরিক্ত ডট বল খেলেছি। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারিনি।” পাকিস্তান ভারত এবং অন্যান্য দলের ক্ষেত্রে কি একই রননীতি নিয়ে খেলতে নামে।উত্তরে পাক অধিনায়ক বলেন, “আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে চেয়েছিলাম। স্ট্রাইক পরিবর্তন করা এবং মাঝে মাঝে বাউন্ডারি তুলে নেওয়া। কিন্তু মাঝের ওভারগুলিতে সেই স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারিনি। অতিরিক্ত ডট বল খেলেছি। প্রথম ছয় ওভারের পাওয়ার-প্লে খেলার সময়ও যথেষ্ট রান তুলতে পারিনি।”
ড্রপ-ইন পিচে বল পড়ে সঠিক টাইমে ব্যাটে আসছিল না। যার ফল ভুগতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। পাকিস্তানের কোন ব্যাটারই সেভাবে রান করতে পারেন নি। একমাত্র মহম্মদ রিজ়ওয়ান ছাড়া কোনও ব্যাটসম্যান ২০ রানের গন্ডি পেরোতে পারেননি। বাবরের কথায়, “পিচ ভালই ছিল। কয়েকটি বল পড়ে মন্থর গতিতে আসছিল।” পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বে বাকি আর দু’টি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ কানাডা এবং আয়ারল্যান্ড। সেই দু’টি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিততে হবে। সেই সঙ্গে আমেরিকাকেও আয়ারল্যান্ড এবং ভারতের বিরুদ্ধে বাকি দু’টি ম্যাচে হারতে হবে। ফলে অঙ্কের বিচারে এখনও আশা বেঁচে থাকলেও আশা পূরণ যে ভীঁষন কঠিন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা ।
Discussion about this post