তীব্র দাবদাহে নাহেজাল বঙ্গবাসী। বৈখাশের তৃতীয় সপ্তাহতেও দেখা নেই কালবৈশাখীর। রেকর্ড ভ্যাপসা গরমে রীতিমত প্রাণ যায় যায় অবস্থা। একপশলা বৃষ্টির জন্য কার্যত চাতকের অবস্থা রাজ্যবাসীর। কুসংস্কার হলেও বৃষ্টির জন্য ইতিমধ্যেই কেউ কেউ দিয়েছেন ব্যাঙের বিয়ে। তবে রাজ্যের সর্বত্র না হলেও কোথাও কোথাও বৃষ্টিতে ভিজেছে জেলার একাংশ। বৃষ্টির দেখা পেয়ে হাসি ফুঁটেছে কিছু মানুষের মুখে। কিন্তু এরাজ্যের এমনও অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের মুখে বৃষ্টিতে নয়, হাসি ফোটে কাঠফাটা প্রখর রোদের ঝসলানিতে। অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। বৃষ্টির জন্য হাহাকার করলেও এই মুহূর্তে তাঁরা কোনওভাবেই বৃষ্টি চাইছেন না । তাঁদের মতে, চাঁদি ফাটা এই তীব্র দহন জ্বালা চচলুক আরও বেশ কিছুদিন। কিন্তু কেন এমন চাহিদা তাঁদের। কোথায় বা থাকেন এমন ধারার মানুষরা।
ভোজন রসিক বাঙালিদের খাবার পাতে ভাত থাকবে না এ কথা ভাবাই দায়। তবে জানেন কি, আসরা যে অন্নকে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখি, সেই ধানকে কত কষ্ট করে রোপণ করতে হয় চাষীদের। ধানের মধ্যে আমরা মূলত আউস, আমন ও বোরো ধানকে চিনি। ধানগুলির মধ্যে আমনের মরশুম শেষ হলেই বোরো ধান চাষ শুরু করেন চাষিরা। এই সময় পাকা বোরো ধান সোনালী শষ্যে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ বাংলা বছরে বৈশাখ-জ্যোষ্ঠ মাসের দিকে বোরো ধান কাটার পালা শুরু হয়।
যা কাজ চলছে পূর্ব বর্ধমানের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে। চলতি বছর পূর্ব বর্ধমানে ১লক্ষ ৭১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন চাষিরা। এই সময়তেই বোরো ধানে মই দেয় কালবৈশাখী। বর্তমানে যে কালবৈশাখী এখনও পর্যন্ত তার খেল দেখাতে পারেনি। তাই তীব্র দাবদাহে কষ্ট হলেও, স্বস্তিতে রয়েছেন বোরো চাষিরা। পূর্ব বর্ধমানের বিস্তৃর্ণ জেলায় সবে মাত্র শুরু হয়েছে পাকা ধান কাটার পালা। বিঘার পর বিঘা ধান কেটে গোলায় তুলতে এখনও যথেষ্ট সময় লাগবে। তীব্র দাবদাহের মধ্যে পাকা বোরো ধানকে কেটে গোলায় তুলতে মরিয়া চাষিরা। তাই দহন জ্বালা হলেও আর কটাদিন এই অবস্থায় থাকার জন্য ঈশ্বরের কাছে কাতর আর্জি চাষিদের।
Discussion about this post