একদিকে ঘূর্ণিঝড় ডানার আতঙ্কে কোনঠাসা বাংলার বিস্তৃর্ণ এলাকার মানুষ। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ই শাপে বর হল মুর্শিদাবাদের মৎসজীবীদের। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গঙ্গায় ঢুকে পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। আর তার জেরেই ইলিশের দাম নেমে গিয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি।
মুর্শিদাবাদের গঙ্গা তীরবর্তী বিস্তৃর্ণ এলাকার মানুষজন মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু বিগত কয়েক দশকে গঙ্গায় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে তাঁদের জালে ইলিশ উঠতো খুব কম। কিন্তু দিন কয়েক আচমকা মুর্শিদাবাদের মৎসজীবীদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। প্রথমে অবাক হলেও পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, কোনও ভাবে ইলিশের ঝাঁক ঢূকে পড়েছে গঙ্গায়। এবং সেই ঝাঁক ফারাক্কা পর্যন্ত পৌঁছে আটকে গিয়েছে। তাই মৎসজীবীদের জালে ধরা পড়ছে ক্যুইন্টাল ক্যুইন্টাল ইলিশ। ফারাক্কা থেকে জলঙ্গী পর্যন্ত একই ছবি। একসাথে এত ইলিশ ওঠায় কপাল ফিরেছে মৎসজীবীদের। সেই সঙ্গে মৎস ব্যাবসায়ীদেরও শাপে বর হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন বাজারে আসতে শুরু করে গঙ্গার ইলিশ। আর স্থানীয় ইলিশ বাজারে ঢুকতেই হু হু করে পড়তে শুরু করে আমদানি করা ইলিশের দাম। একটু ছোট মাপের ইলিশের দাম কেজি প্রতি ২০০ টাকায় নেমে আসে বলে জানা গিয়েছে। ৭০০-৭৫০ গ্রাম ওজনের গঙ্গার ইলিশ মুর্শিদাবাদের বাজার ছেয়ে গিয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এবার ইলিশ কলকাতা-সহ অন্য জেলায় পাঠানো শুরু করেছেন। ফলে ইলিশের দাম কিছুটা কমার আশা করছেন মৎস ব্যবসায়ীরা।
মৎসজীবীদের কথায়, বহু বছর গঙ্গায় ইলিশ ধরা পড়ে না। বিশেষ করে ফরাক্কা বাঁধ দেওয়ার পর থেকে গঙ্গা নদীতে থেকে ইলিশ প্রায় উবেই গিয়েছিল। এবার ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে সম্ভবত সমুদ্র থেকে প্রচুর ইলিশ ঢুকে পড়েছে গঙ্গা নদীতে। আর সেই ইলিশ এসে পৌঁছেছে ফরাক্কা পর্যন্ত। ফলে যেখানে ঘূর্ণিঝড় ডানা নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেখানে গঙ্গায় প্রচুর পরিমান ইলিশ পেয়ে সেই ঘুর্ণিঝড় ডানা-কেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন মুর্শিদাবাদের মৎসজীবীরা।
Discussion about this post