মুহম্মদ ইউনুসের সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করতে দেশের সেনা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানালেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৫ অগাস্ট গণ অভ্যত্থানের মুখে দেশ ছাড়ার পর এই প্রথম দেশের সেনা বাহিনীর উদ্দেশে অনেক কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সেনা বাহিনী, বিশেষ করে তরণ সেনা অফিসারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। দেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার বেশি রাতে আওয়ামী লিগ আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় হাসিনা সেনা বাহিনী, বিশেষভাবে তরুণ সেনা অফিসারদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন জঙ্গি রাষ্ট্র, জঙ্গিদের অভয়ারণ্য। মহম্মদ ইউনুস জঙ্গিদের দিয়ে সরকার চালাচ্ছেন। প্রশাসনের সর্বত্র তারা ছড়ি ঘোরাচ্ছে। এই সরকার, প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে ডাক পাবেন না।’ ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমান হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানাকে দিল্লির অদূরে হিন্ডেন বিমান বন্দরে নামিয়ে দিয়ে যায়। পরে জানা যায়, সেনা প্রধান ওয়াকার উজ-জামান গণ অভ্যুত্থানকারীদের রুখতে শক্তি প্রয়োগ করতে অস্বীকার করেন। এক প্রকার সেনা বাহিনীর অসহযোগিতার মুখে দেশ ছাড়তে হয় হাসিনাকে। তারপর টেলিফোনে এবং ভার্চুয়াল সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং তাঁর দেশত্যাগ নিয়ে অনেক কথা বললেও সেনা বাহিনীর প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান আওয়ামী লিগ নেত্রী। এমনকী সেনা বাহিনী তাঁর আদেশ অগ্রাহ্য করেছে বলেও অভিযোগ করেননি। বরং বারে বারেই দাবি করেছেন, বলপ্রয়োগে তিনিই নিষেধ করেছিলেন। অস্থির পরিস্থিতিতে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ করেন। ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করছেন, বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর তরুণ অফিসারদের প্রতি হাসিনার পরামর্শ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশ সেনা বাহিনী সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেনায় জামায়াতে ইসলামির প্রবল প্রভাব রয়েছে এবং তা নীচু ও মাঝের স্তরের অফিসারদের মধ্যে বেশি। হাসিনার অভিযোগ, ইউনুস সরকার প্রশাসনের সর্বত্র জামাত ও শিবিরের লোকজনকে বসিয়ে দিচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিবির তো আমেরিকায় নিষিদ্ধ। এমন নিষিদ্ধ সংগনের লোকজনকে কী করে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, গুলি চালাতে অস্বীকার করার পিছনে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের হাতছানি একটি কারণ ছিল। বিদেশে শান্তি মিশনের ডেপুটেশনে গেলে বিপুল অর্থ উপার্জন করা যায়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা শান্তি রক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি। ওই বাহিনীতে যোগদানের সুযোগ পেতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতা এবং ধরাধরি চলে। হাসিনার সতর্কবার্তা বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর জন্য কতটা জরুরি? ওয়াকিবহালের বক্তব্য, প্রায় আড়াই মাস হতে চলল সেনা বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজেও যুক্ত। ধরপাকড়ের পাশাপাশি বিচারের অধিকারও দেওয়া হয়েছে পদস্থ সেনা অফিসারদের। সেনা-পুলিশের যৌথ বাহিনীর বেশ কিছু অভিযানে মানবাধিকার হরণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তারমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া ফেলে দেওয়া ঘটনা হল চট্টগ্রামের হাজারি গলি। ওষুধের ওই পাইকারি বাজারের সিংহভাগ ব্যবসায়ী হিন্দু। সেনা ও পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে বেছে বেছে হিন্দুদের দোকান ভাঙচুর করে। তার আগে সিসি ক্যামেরাগুলি ভেঙে দেয়। হিন্দুদের ধরে নির্মমভাবে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ জঙ্গিহানা হয়। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পর্যটক।...
Read more
Discussion about this post