কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলন বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের জন্ম দেয়। তার জেরে আগস্টে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে শেখ হাসিনার সরকারের পরিবর্তন হয়। তারপরেই মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় বাংলাদেশে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন মুহাম্মদ ইউনূস। কীভাবে সেখানে নির্বাচন হবে এবং এই ক্ষেত্রে সংস্কার করা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন তিনি। বিএনপি সহ বিভিন্ন দল সেখানে দ্রুত নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছে। তবে সেই বৈঠকে ডাকা হয়নি আওয়ামি লিগকে। আগেই শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় জানান, সেখানের নির্বাচনে অংশ নেবে আওয়ামি লিগ। বাংলাদেশের নির্বাচন এবং সংস্কার আওয়ামি লিগ ছাড়া সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন জয়। এবার বাংলাদেশের সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় বেঁধে দিলেন। একটি আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনা প্রধান বলেছেন, ‘আমি মনে করি ১৮ মাসের মধ্যেই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।’ অর্থাৎ বাংলাদেশে ভোট করতে হবে আঠারো মাসের মধ্যে, সময় বেঁধে দিয়েছেন জেনারেল জামান। তবে তার আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। সেগুলি সম্পন্ন করতে চাইছে অন্তর্বতী সরকার তারপরে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। আর এর জন্য সেনা সবরকমভাবে বাংলাদেশ সরকারকে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন ওয়াকার-উজ-জামান। রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “যাই হোক না কেন আমি এই সরকারের পাশে দাঁড়াব। যাতে তারা তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারে।” এছাড়াও যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের অঙ্গীকার করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে এই সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলন করে সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন করবে সেখানের সেনা। তিনি বলেন, ‘দেশের সংস্কার কাজে সাহায্য করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন করা হবে।’ রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জানান, ‘মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন এবং আস্থা রয়েছে। আমরা চাইছি ইউনূস যেন তাঁর মিশন সম্পন্ন করতে পারেন। আমি তাঁর পাশে থাকব’। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল হাসিনার আওয়ামী লিগ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল উভয়ই তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, দলটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করতে চায়। তিনি বলেন, ‘আমি কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে চাইছি না। তবে আমি মনে করি যত তাড়াতাড়ি তত ভাল। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আগামীকাল নির্বাচন হলেও আমরা প্রস্তুত।’ সেনাপ্রধান আরো জানান, সংস্কারের পর নির্বাচন হবে। এর জন্য ধৈর্য রাখা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, ইউনুসের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে সেনা প্রধানের। তিনি এমনটাই দাবি করেছেন। তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে সেনাবাহিনী সবরকমভাবে সমর্থন করছে। অন্যদিকে, সেনাবাহিনী রাজনৈতিকভাবে কোনওকিছুতে হস্তক্ষেপ করতে চায় না বলেও জানান সেনাপ্রধান। তিনি মনে করেন, বাহিনীর ক্ষতি করতে পারে এমন ধরনের কিছু করা উচিত নয়, বাহিনীকে পেশাদার করে রাখা উচিত। জানিয়ে রাখি, রাজনৈতিক দলগুলির ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে পড়ে অবশেষে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবার দেশের সাধারণ নির্বাচনের জন্য এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে এই নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। একইসঙ্গে ভোটে আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ করা হবে না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও কবে ভোট হবে তা নিয়ে সরকারের তরফে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে ২০২৬-এর মাঝামাঝি সময়ে ভোট হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের এক উপদেষ্টা। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে যে বৈঠক করছে, তাতে অনেকেই দেশের রাষ্ট্রপতি পদে সরাসরি নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ না থাকা এবং সংবিধানে না ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনার মতো প্রস্তাব করছে। এর মধ্যেই কমিশনের বৈঠকগুলোতে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে অনেকেই রাষ্ট্রপতি পদে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দেয়ার কারণে বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে আলোচনার আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণের একটা অংশ যেখানে ভারতের বিরোধিতা করতে ব্যাস্ত। ওই দেশের তদারকি সরকারের অভ্যন্তরেও যেখানে ভারত বিদ্বেষী কয়েকজন উপদেষ্টা আছেন।...
Read more
Discussion about this post